বিমান ভাড়া বাড়ানোসহ হজের ব্যয় নির্ধারণে সিন্ডিকেট করে হাবের পক্ষ থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
বিমান ভাড়া বাড়ানোর সিন্ডিকেটে সংগঠনটি (হাব) জড়িত বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চলছে, তারই প্রেক্ষিতে রোববার হাবের মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, হাবের দীর্ঘ বছরের সুনাম ক্ষুন্ন করতে একটি মহল কাল্পনিক অভিযোগ তুলে অপপ্রচার চালিয়ে অতীতের মতো হজের পবিত্র ব্যবসাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। তাদের টার্গেট পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে হাব দখল করে আবারও বাণিজ্য, রিপ্লেসমেন্ট দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম ফিরিয়ে এনে হজ ব্যবস্থাপনাকে কলুষিত করা। তিনি এসব অপপ্রচারে এজেন্সি মালিকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে গত শনিবার রাতে হাবের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। সংগঠনটির মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিমান ভাড়া নির্ধারণ করে থাকে। হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য হজযাত্রী পরিবহন উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য হাব বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে আসছে। এ বছরও হাবের পক্ষ থেকে বিমান ভাড়া কমানোর জন্য অভিজ্ঞদের নিয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে যৌক্তিক বিমান ভাড়া নির্ধারণে বিমানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করা হয়। কিন্তু তাতে তারা সাড়া দেয়নি। ফলে বিমান ভাড়াও কমেনি। বিমান ভাড়া নির্ধারণে হাবের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ একেবারেই কাল্পনিক।
হাব জানায়, ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্ধারিত হজ প্যাকেজ মূল্যের আলোকেই হাবের হজ প্যাকেজ ঘোষিত হয়ে থাকে। এই প্যাকেজ মূল্য নির্ধারণের সময় মতামত দেওয়া ছাড়া হাবের আর কোনো ভূমিকা থাকে না। হাব বরাবরই হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ কমিয়ে হজ প্যাকেজ মূল্য কমানোর জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোরালো অনুরোধ জানিয়ে থাকে। হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য প্রতি বছরই হাব জোর দাবি জানিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সই বিমান ভাড়া নির্ধারণ করে থাকে।
এতে বলা হয়, হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য হজযাত্রী পরিবহন উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য হাব বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে আসছে। ফলে বিমান ভাড়া নির্ধারণে এমনকি এ ব্যাপারে এখানে হাবের সিন্ডিকেটের অভিযোগ একেবারেই কাল্পনিক। হজের ব্যয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে হাবের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট করার কোনো সুযোগই নেই। কোনো এজেন্সি সরকার ঘোষিত প্যাকেজ মূল্য ও তার আলোকে হাব ঘোষিত প্যাকেজ মূল্যের আলোকে প্যাকেজ মূল্য নিয়ে হজযাত্রীদের সাথে কোনো অনিয়ম করে থাকলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। হাবও এই ধরনের অভিযোগ পেলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে হজে যেতে পারে তার জন্য দেশে হাবের তদারকি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করে থাকে। মক্কা-মদিনায় হজ যাত্রীদের সেবায় হাবের টিম কাজ করে থাকে। ফলে গত কয়েক বছরে হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে। কিছু এজেন্সি বিরুদ্ধে কখনো কখনো অনিয়মের অভিযোগ ওঠে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।’
প্রতারণার শিকার হয়ে কোনো হজযাত্রীর হজ যাত্রায় অনিশ্চয়তা দেখা দিলে হাব সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীকে পাঠানোর জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এই কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতারণার শিকার হয়ে হজে যেতে না পারার অভিযোগ নেই বললেই চলে। হজ ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার কারণে হাব বিভিন্ন মহলে যেখানে প্রশংসিত, সেখানে হাবের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।
এতে বলা হয়, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই একটি কুচক্রি মহল মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার লিপ্ত রয়েছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। হাব একটি অরাজনৈতিক ব্যবসায়ীদের অলাভজনক সংগঠন হিসেবে কাজ করে আসছে। এটি আল্লাহর মেহমান হাজিদের সেবায় নিয়োজিত। নিয়ম অনুযায়ী তাদের সরাসরি ভোটে হাবের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়ে আসছে। এখানে কখনো দলীয় বিবেচনা কোনো সময়ই প্রাধান্য পায় না। হাবের বর্তমান কমিটিও এর ব্যতিক্রম নয়।’