জাতীয়

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে, শিগগিরই অনুমোদন

চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ।

তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা মন্ত্রিসভায় পাঠাবো। রোববারের মধ্যে এটার খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনে কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আকমল হোসেন আজাদ বলেন, মাঠ পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে জনবলের অপ্রতুলতা রয়েছে। কিন্তু, বিপরীতে সে জায়গাগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগীর চাপ লেগে থাকে। এর ফলে কোনো কোনো জায়গায় চিকিৎসাসেবার ব্যত্যয় ঘটে থাকে। এই সমস্যাগুলোর সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার জন্য ঢাকায় ১৩টি হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তী সময়ে সারা দেশের আহত ছাত্র-জনতার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো থেকে যাদের ঢাকায় রেফার করা হয়েছে, তাদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্সে করে এনে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আহতদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হাসপাতালগুলোর ডেডিকেটেড অংশে স্থানান্তর করা হয়েছে, যেখানে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চিকিৎসা সম্পর্কিত অভিযোগ, পরামর্শ, তথ্য জানার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে হটলাইন খোলা হয়েছে। হটলাইনে আসা কলগুলো পর্যালোচনা করে সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সচিব বলেন, অনেক হাসপাতাল বিনামূল্যে আহতদের চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। যারা আহত হয়েছেন, বিশেষ করে যারা চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, পায়ে আঘাত পেয়েছেন, অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য বিদেশ থেকে মেডিক্যাল টিম আনার প্রক্রিয়া চলমান। এজন্য বিভিন্ন দেশ এবং বহুজাতিক উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। যাদের দেশে চিকিৎসা করতে হাসপাতাল অপারগতা প্রকাশ করেছে, তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।

স্বাস্থ্য সচিব আরও বলেন, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও শহিদ পরিবারকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন এবং শহিদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে একজন প্রাক্তন স্বাস্থ্য সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ইতোমধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা এবং আহত-নিহতদের প্রাথমিক একটা তালিকা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছেন।

মৃতের সংখ্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ৭০০ জনেরও বেশি নিহত এবং ১৯ হাজার জন আহত হওয়ার তালিকা পেয়েছি। এ তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে, এটা বলা যাবে না। তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই কাজ চলছে। এছাড়া, দেশের বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিষয়ভিত্তিক প্রয়োজনীয় সংস্কার ও চিকিৎসাসেবার গুণগত মান উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালীকরণের জন্য ১২ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করা হয়েছে। তাদের কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।