জাতীয়

‘সিডও বাস্তবায়নে সামাজিক বাধার অজুহাতে বৈষম্যের সুযোগ নেই’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপে জাতিসংঘ কনভেনশন বাস্তবায়নে সামাজিক বাধার অজুহাতে বৈষম্য টিকিয়ে রাখার সুযোগ নেই। সিডও’র গুরুত্ববহ ও তাৎপর্যপূর্ণ দুটি ধারা বাংলাদেশ এখনো সংরক্ষণে রেখেছে। যা বাস্তবায়ন করতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বাধা অতিক্রম করতে হবে। বাংলাদেশের এ অবস্থান সিডওর মূল চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক বৈষম্যবিরোধী কনভেনশন, সিডও দিবস উপলক্ষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সভাকক্ষে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ কমিটির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন।

ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের সমাজকে অগ্রগতির ও প্রগতির পথে প্রস্তুত করতে হবে যাতে নারীর সামাজিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা যায়। আমাদের সংবিধানে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণের যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তার সাথে সাংঘর্ষিক অবস্থানের সুযোগ নেই। পাশাপাশি, সিডও কমিটির কাছে প্রতি ৪ বছরে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও নিয়মিত তা প্রেরণ করা হয় না। এ প্রতিবেদন যথাসময়ে প্রেরণের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। সভায় সিডও সনদের সংরক্ষণ প্রত্যাহার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্তরায় এবং উত্তরণের উপায়, নারী ও শিশুর প্রতি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে করণীয় ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনায় তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলপ্রসূতায় নারীর প্রতি বৈষম্য নিরোধে কোটার যৌক্তিকতা নিয়েও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বেসরকারি নারী অধিকার সংস্থার উপস্থিতিতে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সভায় আলোচকগণ বৈষম্য বিলোপ করে নারী অধিকার নিশ্চিতকরণের বাস্তবভিত্তিক সুপারিশ প্রদান করেন। আলোচনা ও পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে একটি কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও সকল অংশীদারদের অংশগ্রহণে বৃহৎ পরিসরে কর্মশালা অনুষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ধারা-২ এবং ধারা ১৬.১ (গ) বিষয়ে বাংলাদেশের আপত্তি রয়েছে অথচ এই দুটি ধারাতেই বৈষম্য বিলোপের মূল বিষয় রয়েছে । এর বাস্তবায়ন না করা দেশের সংবিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। এ বিষয়ে আলোচকগণ ধারা দুটি অনুমোদন ও বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ও যৌক্তিক পদক্ষেপ আলোচনা করেন এবং বৈষম্য নিরসনপূর্বক আইনি কাঠামো শক্তিশালীকরণে গুরুত্বারোপ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফসল ভোগ করতে নারীর অবস্থানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ যৌক্তিকভাবে কোটা বজায় রাখার বিষয়ে আলোচনা হয় সভায়। সভা সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সম্মানিত সদস্য ড. তানিয়া হক। আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএন উইমেন, নারীপক্ষ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ব্লাস্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল উইমেন লইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, সম্পর্কের নয়া সেতু ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।