কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জমির নামজারির ঘুষের হার নির্ধারণ সংক্রান্ত অডিও ভাইরাল হওয়া আলোচিত পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের সাবেক এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার-ভূমি) মো. মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ওএসডি করা হলেও বিভাগীয় মামলার তদন্তে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাননি তদন্ত কমিটি।
অডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় ওই সময় একজন জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পেলেও বিভাগীয় মামলার তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায়নি। বরং আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মাসুদুর রহমানকে অভিযোগের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এত সই করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন, স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যসহ সার্বিক পর্যালোচনায় সহকারী কমিশনার-ভূমি মো. মাসুদুর রহমান বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী আনা অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ না হওয়ায় তাকে এ বিভাগীয় মামলার অভিযোগের দায় হতে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
গত বছরের জুলাইয়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভার কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হয়। সেখানে জমির নামজারি করার জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তারা ছয় হাজার টাকা ঘুষ নেবেন বলে নির্ধারণ করে দেন পিরোজপুরের নাজিরপুরের তৎকালীন সহকারী কমিশনার-ভূমি মাসুদুর রহমান। পরবর্তীতে এটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পরপরই তৎকালীন পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি অডিও ক্লিপের কথোপকথনের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।একইসঙ্গে নাজিরপুরের এ্যসিল্যান্ড থেকে সরিয়ে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন ও মন্ত্রিপরিষদের মতামতে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ অনুযায়ী তার এ কাজকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। মাসুদুর রহমানকে নিয়ে শুনানি ও তদন্ত শেষে গত ২০ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি বলে তিনি তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। তার প্রেক্ষিতে মাসুদুর রহমানকে দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।