জাতীয়

ঢাকা দক্ষিণ সিটির তিন মার্কেটে চাঁদাবাজির অভিযোগ মালিকপক্ষের

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ফুলবাড়িয়া এলাকার তিন মার্কেট (নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা ও জাকের প্লাজা) ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে একটি অসাধু চক্র। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মার্কেটগুলো প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করতো যারা, তারা এখন নতুনভাবে চাঁদা আদায় করছে বলে দাবি করেছেন মালিকপক্ষ।

জানা গেছে, এই মার্কেট তিনটি ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় অবস্থিত। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর ফুলবাড়িয়া সুপারমার্কেট-২ এর এ, বি ও সি ব্লকের সিটি প্লাজা, নগর প্লাজা ও জাকের সুপার মার্কেটের পার্কিংয়ের স্থানে নির্মাণ করা দোকান উচ্ছেদ করে দক্ষিণ সিটি। এই তিন মার্কেটে বৈধ দোকান রয়েছে ৫৩১টি আর অবৈধ ছিল ৯১১টি। এসব দোকান অবৈধভাবে বরাদ্দপত্র দেওয়ায় উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ফের তিন মার্কেটের পার্কিং স্থলে দোকান নির্মাণ চেষ্টা করছে অসাধু চক্র। এখন তারা তিন মার্কেটের উচ্ছেদকৃত পার্কিং স্থলে ফের দোকান নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নামে চাঁদা আদায় ও দোকান নির্মাণ করতে চাচ্ছে।

এই তিন মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ও ফজলে নূর তাপসের ছত্রছায়ায় এই তিন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের থেকে এই চক্রটি চাঁদা আদায় করেছে। এদের বাধা দিলে আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। তারা এখন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় ও দোকান নির্মাণ করতে চাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের নামে প্রতিটি দোকান থেকে ২৫ হাজার করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের শাসনামলে অবৈধভাবে নকশার বাইরে নির্মিত দোকানগুলো ভেঙে পার্কিংয়ের জায়গায় পার্কিং করা হয়। এই পার্কিং ইজরা দেওয়া হয় রাইতা এন্টারপ্রাইজকে। যার দেখাশোনা করতেন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আউয়াল হোসেন। আওয়ামী শাসনামলের অবসানের পর আবারো মার্কেটগুলোতে পার্কিংয়ের জায়গায় দোকান নির্মাণ করার চেষ্টা চলছে। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মামুন নিজে বার বার দোকান নির্মাণে বাঁধা দিয়েছেন। একপর্যায়ে পার্কিংয়ের গেটে তালা মারেন কাউন্সিলর মামুন। এখন পার্কিং এর আগের ৫৩১ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আইনি সহায়তার নামে টাকা উঠানো হচ্ছে বলে মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটির সংশ্লিষ্ট শাখায় কথা বললে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘মার্কেটের নকশার বাইরে কোনো দোকানই আর পুনরায় নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। আর ব্যবসায়ীদের এখানে কোনো ধরনের চাঁদা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ডিএসসিসির প্রশাসক স্যার।’

মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মার্কেটগুলোতে কোনো বৈধ কমিটি না থাকলেও কাউন্সিলর আওয়ালের লোকজন আওয়ামী লীগের পরিচয় বদলিয়ে নতুনভাবে চাঁদাবাজি শুরু করেছেন। সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবি, যদি ব্যবসায়ীরাই মার্কেট পরিচালনা করে থাকে তাহলে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি কেন তারা নিলেন না?’ তবে এ বিষয়ে আওয়ালের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী বলেন, আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক ড. মহ. শের আলীর বক্তব্য জানতে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।