জাতীয়

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রমে যুক্ত হলেন ৪৫০ স্বেচ্ছাসেবী

ডিএনসিসির মশক নিধন কার্যক্রম তরান্বিত করতে এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে ডিএনসিসির সচেতনতা কার্যক্রমে যুক্ত করা হলো ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ইপিআই কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী বস্তি এলাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি ও ডেঙ্গু রোগী খুঁজে বের করতে বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ডিএনসিসির ইপিআই এর সাথে সংযুক্ত ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী তাদের নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ২, ৩, ৪ ও ৫ এর অন্তর্গত ১৩টি ওয়ার্ডে ঘনবসতিপূর্ণ মোট ১৮টি বস্তি (কড়াইল বস্তি  সাততলা বস্তি, বাউনিয়াবাধ, কল্যানপুর পোড়া বস্তি, রহমত ক্যাম্প, আগারগাঁও বিএনপি বস্তি, চলন্তিকা বস্তি, মেথরপট্টি, মিরপুর সিরামিকস বস্তি ইত্যাদি) এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে বস্তিবাসীদের সচেতন করছে।

এসব স্বেচ্ছাসেবীরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করছে। এছাড়াও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তথ্যও সংগ্রহ করছে তারা।

এই বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, ইপিআই এর সাথে সংযুক্ত ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী ডিএনসিসি এলাকার বস্তিতে প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাওয়ায় নিয়মিত টিকাদানের পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে তারা মানুষের মধ্যে সচেতনতা বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। কমিউনিটি ভলান্টিয়াররা প্রতিদিন মোট ২০ হাজার বাড়ি পরিদর্শন করবে। ৩৩ জন সুপারভাইজার স্বেচ্ছাসেবীদের এই কার্যক্রম তদারকি করবে। স্বেচ্ছাসেবীদের এই কার্যক্রম ডেঙ্গু প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

এছাড়াও ডিএনসিসির প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রসমূহে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে First Contact Person হিসেবে চিকিৎসক ও নার্সদের গত দুই দিন ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর বনানী এলাকার হোটেল সারিনায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং ইউনিসেফ এর যৌথ উদ্যোগে ৬০ জন চিকিৎসক ও ৩০ জন নার্সদের ২ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওযায় ডেঙ্গু রোগী ক্লিনিক্যালি সনাক্তকরণ, চিকিৎসা ও পরামর্শ, ডেঙ্গু হেমোরেজিক ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম সনাক্ত ও রেফারাল সিস্টেম এর ওপর এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শহীদ সোহরওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজমুল আহসান ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ শিমুল ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দুই দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ দেয়।

প্রশিক্ষকরা প্রশিক্ষণে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ, বিপজ্জনক চিহ্ন সনাক্তকরণ, বাড়ীতে রেখে রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম, রোগীর তদারকি, রিপোর্টিং সম্পর্কে ধারনা প্রদান করেন। এছাড়া গর্ভবতী মা, বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা রয়েছে তাদের দ্রুত ডেঙ্গু জ্বর সনাক্তকরণ এবং জরুরি ভিত্তিতে হাসপালে ভর্তি/অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ফলে চিকিৎসকরা ডিএনসিসি এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণ বিশেষ করে মা ও শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর সনাক্তকরণ ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান এবং জটিলতা চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে রেফারাল সেবা সঠিকভাবে প্রদান করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে জনগণ উপকৃত হবেন।