উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে পাচার হয়ে যাওয়া সম্পদ ফেরত আনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতিসংঘ সদরদপ্তরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বাংলায় দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘রাজনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাগরণ ব্যতীত শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। প্রায় এক দশক পূর্বে বিশ্ব সম্প্রদায় সর্বসম্মতভাবে এজেন্ডা ২০৩০ প্রণয়ন করে। আমরা সবাই আমাদের সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বাস অর্পণ করেছি এই সার্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে। তদুপরি মাত্র ১৫ শতাংশের কম লক্ষ্যসমূহ অর্জিত হয়েছে। স্পষ্টতই এ ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়নশীল রাষ্ট্র আরও পিছিয়ে আছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এসডিজি অর্থায়নে বছরে প্রায় ২.৫ থেকে ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্বের ঋণের বোঝা, ক্ষয়িষ্ণু আর্থিক সক্ষমতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা আশা করি, উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন সংক্রান্ত ৪র্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ধরনের জটিল এবং কাঠামোগত সমস্যাগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে যেন সব রাষ্ট্র সমানভাবে সম্পদ ও সুযোগের ব্যবহার করতে পারে। তারা নিজেদের কর্মসূচিতে সামাজিক ব্যবসাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দিতে পারে। যেন নিম্ন আয়ের দেশগুলোর বাস্তবতা বিশেষভাবে মোকাবিলা করা যায়- যা ব্যবসায়ী উদ্যোগ ও ব্যক্তির সৃজনশীলতাকে উদ্বুদ্ধ করে এবং যা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিশেষভাবে সহায়তা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে অবৈধ অর্থের প্রবাহ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদের পাচার বন্ধ করা অত্যাবশ্যক। উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে পাচার হয়ে যাওয়া সম্পদ ফেরত আনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। আমরা আশা করি যে, কর ফাঁকি রোধে আন্তর্জাতিক কর কনভেনশন অতিশিগগির গৃহীত হবে।’