জাতীয়

নির্বাচন নিয়ে সরকার রহস্য করছে: ববি হাজ্জাজ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফ থেকে নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, ‘বিপ্লব এবং সংস্কারের মূলমন্ত্রই হলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। এ জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নেই। তবে সরকার নির্বাচন নিয়ে রহস্য করছে। সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আসা নানা মন্তব্যে জনমনে ধ্রুমজাল তৈরি হয়েছে।’

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এনডিএম আয়োজিত ‘ছাত্র-জনতার সংহতি সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

ববি হাজ্জাজ বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন নির্বাচন কবে হবে সেটা ঠিক করবে দেশের জনগণ। আমাদের প্রশ্ন, জনগণকে কি তাহলে নির্বাচনের দাবি আদায়ের জন্য আবার রাজপথে নামতে হবে? একমাত্র নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই জনগণের রায় জানা যাবে।

তিনি বলেন, সংস্কারে গঠিত কমিশনগুলো এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে পারে নাই, যা আজ শুরু হবার কথা ছিল। এখন সরকার বলছে সংস্কার নিয়ে প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করবে। আমরাও এই দাবি জানিয়েছিলাম। দেরিতে হলেও সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়াতে আমরা আনন্দিত। আমরা এই সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ দেখতে চাই না।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে থাকা বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আমরা দূরত্ব চাই না। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ না থাকলে পরাজিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ চোরাগোপ্তা হামলার সুযোগ খুঁজবে। স্বৈরাচারী হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শেষ অপরাধীর বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র মাসুদ রানা জুয়েলের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন এনডিএম মহাসচিব মোমিনুল আমিন। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লব এবং সংস্কারের  আকাঙ্খার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করতেই আমরা আজ সংহতি সমাবেশ আয়োজন করেছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা দেশকে দ্রুতই গণতন্ত্রের মহাসড়কে নিয়ে যেতে চাই। আশা করছি, সরকারের সাথে আমাদের পরবর্তী সংলাপের পরেই আমরা নির্বাচনের রোডম্যাপ পেয়ে যাব। 

সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, ভাসানী ছাত্র পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন, সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইসমাইল সম্রাট, ছাত্র ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা, বৈষম্যবিরোধী কওমী প্রবাসী ছাত্র আন্দোলন, তিতুমীর কলেজ সমন্বয়ক জায়েদ খান, ঢাকা কলেজ সমন্বয়ক ইয়াসিন আরাফাত, কুয়েটের সমন্বয়ক সাজিদ সরকার, ম্যাস মেরিন ইন্সটিটিউটের সমন্বয়ক ইমরান হোসেনসহ অন্যান্য সংগঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কবৃন্দ।

উপস্থিত ছিলেন, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ ফরিদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক রাব্বি আল রাফসান, মাদ্রাসা বিষয়ক সম্পাদক রাহাতুল ইসলামসহ প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম, দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি প্রমুখ।