জাতীয়

আমরা ঢাকা শহর বদলে দিতে চাই: আদিলুর রহমান খান

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, আমরা ঢাকা শহরটাকে বদলে দিতে চাই। যেদিকেই তাকাবেন, দেখবেন শহর নোংরা হয়ে আছে। ঢাকা শহরে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য গাছ নেই। প্রায় সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ঢাকা শহর কংক্রিটের শহর হয়ে গেছে। এখানে গরিবের আবাসনের ব্যবস্থাও নাই।

সমস্যাগুলো দূর করে শহর বদলে দেয়ার বিষয়টিকে নিজেদের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

রোববার ঢাকায় রাজউক অডিটোরিয়ামে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪ এর আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি তরুণদের সম্পৃক্ত করে নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা নিতে চাই, তাহলে এখনই শুরু করা দরকার। ব্যাপক সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আমরা আমাদের যেটুকু সময় পাবো, সংস্কারটা শুরু করে দিয়ে যাবো। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য এবং সেখানে ব্যাপক পরিবর্তন লাগবে আমাদের মাইন্ডসেটের, মন্ত্রণালয় এবং রাজউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের।

উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আরো বলেন, অনেক ফ্যাসিটিলিজ ধরে রাখা হয়েছে। যেমন এই কোটা, সেই কোটা। সমস্ত কোটা উঠিয়ে কেন লটারির মাধ্যমে ঢাকা শহরে জমি দেওয়া হয় না? এই প্রশ্ন রেখে উপদেষ্টা বলেন, এই ফ্যাসিলিটিজগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। তরুণদের এগিয়ে নিয়ে আসার পথ করে দিতে হবে। আমরা দরজা বন্ধ করে রাখি, যেন তারা আসতে না পারে। এই দরজাগুলো খুলে দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষের জন্য, তরুণদের জন্য। 

আমাদের হাজার হাজার কর্মী আছেন, যারা বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার জন্য কাজ করছেন। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এই সময়টাকেই বদলে দেওয়া দরকার। বলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ, মিজ গোয়েন লুইস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হামিদুর রহমান খান।

অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দরকার। ঢাকার জন্য একটি নগর দর্শন তৈরি করা জরুরি। শুধু মেগা প্রজেক্ট করলেই হবে না, সবুজায়ন বাড়াতে হবে। উন্মুক্ত জায়গা, বসার স্থান, এবং তরুণদের খেলাধুলার সুযোগ থাকতে হবে।

ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ইন বাংলাদেশ মিজ গোয়েন লুইস বলেন, টেকসই ও নিরাপদ নগরের জন্য তরুণদের সম্পৃক্ততা জরুরি। এবারের বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই মানানসই।

সভাপতির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ হামিদুর রহমান খান বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করার জন্য মন্ত্রণালয় ও রাজউক কাজ করছে। পুরান ঢাকাকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হাজারীবাগের রিলোকেশন ও রিজেনারশনের জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় ক্লাস্টারভিত্তিক ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ শুরু করেছি। এগুলো বাস্তবায়িত হলে ঢাকার পরিবেশের অনেক পরিবর্তন হবে।

অনুষ্ঠানে বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৪ এর  স্মরণিকা এবং UN- Habitat কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের ভবন ও নির্মাণ খাতের ডিকার্বনাইজেশনের রোডম্যাপ’- এর মোড়ক উম্মোচন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ছিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব:) ও অতিরিক্ত সচিব শাকিলা জেরিন আহমেদ বক্তৃতা করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুগ্মসচিব নায়লা আহমেদ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এস. এম. সিয়াম এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের রাইদা ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামিম আখতার, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ নুরুল বাসির, এইচবিআরআই-এর মহাপরিচালক মোঃ আশরাফুল আলম, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ মাহমুদ আলী মন্ত্রণালয়, দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, রিহ্যাবের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।