ওয়াশিংটনে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পররাষ্ট্র দপ্তর ও হোয়াইট হাউজের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে জোরালো করার বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ও শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এই বৈঠকগুলো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিবের এই বৈঠক হয়।
এসব বৈঠকে বাংলদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম আইন সংস্কার ইত্যাদিতে যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
শনিবার (১২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন।
ওয়াশিংটনে আয়োজিত এই বৈঠকে তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা, মানবিক প্রতিক্রিয়া এবং রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এবং শ্রম অধিকার ইস্যু ইত্যাদি বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্সেস বিষয়ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র সচিব এম জসীম উদ্দিন।
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর ও সম্প্রসারণ এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তারা।
পররাষ্ট্র সচিব ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের গতিতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গভীর করার উপায় এবং অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোতে কার্যকর সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সহকারী ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক লিন্ডসে ডব্লিউ ফোর্ডের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার অ্যাজেন্ডা, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম আইন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণে পারস্পরিক সহযোগিতা, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের নিবন্ধন সহজীকরণ ও নিবন্ধন ফি হ্রাস, শ্রম আইন সংস্কার এবং ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কো-অপারেশনে (ডিএফসি) প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, ভারপ্রাপ্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টা সি ইয়ুথ, উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক, উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনিকা অ্যাগার জ্যাকবসেন এবং ডিরেক্টর আল্লা পি প্রমুখ।
ওয়াশিংটন সফরের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিউইয়র্ক সফর করেন এবং ১৪ অক্টোবর ওয়াশিংটন ত্যাগ করার কথা রয়েছে।