জাতীয়

বাংলাদেশকে ‘চোখ রাঙিয়ে’ পশ্চিমবঙ্গ-ওড়িশায় দানার তাণ্ডব

বাংলাদেশকে চোখ রাঙিয়ে অবশেষে ‘অতিপ্রবল’ ঘূর্ণিঝড় দানা আছড়ে পড়েছে ভারতের পূর্ব-দক্ষিণের রাজ্য ওড়িশায়, যাত্রাপথে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ হয়ে কলকাতাতেও ভারী বৃষ্টি ঝরাচ্ছে; সঙ্গে রয়েছে ঝড়ো হাওয়া।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটারের বেশি গতি নিয়ে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের ভূখণ্ডে আঘাত করে দানার অগ্রভাগ। মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওড়িশা ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যের ওপর তাণ্ডব চালাতে চালাতে আরও দক্ষিণে এগিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানাচ্ছে, ওড়িশার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় দানার গতি ঘণ্টায় ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার হতে পারে।

অবশ্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওপর দানার প্রভাব পড়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস রয়েছে; তবে এর চোখ রাঙানি সে অর্থে দেখতে হচ্ছে না।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুর রহমান রাত ৯টায় রাইজিংবিডিকে বলেন, বাংলাদেশে এই ঘূর্ণিঝড়ের আঞ্চলিক প্রভাব পড়বে, যাকে বলা হয় ঘূর্ণিঝড়ের ‘টেরিটোরিয়াল ইফেক্ট‘। এর ফলে বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টি ও বেশ ঝড়ো হাওয়া বইবে।

বাংলাদেশ আঘাত না করলেও দানার প্রভাবে দেশের ১৪টি জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসও হতে পারে বলে তথ্য দিয়েছেন শাহিনুর রহমান।

অবশ্য দানার প্রভাবে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় গাছ ভেঙে বরগুনার বেতাগী উপজেলায় একজনের প্রাণহানী হয়েছে, চাঁদপুরে একজন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন; এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গবাদি পশু ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে নৌচলাচল।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় আনন্দবাজার লিখেছে, ঘূর্ণঝড়টির চোখ সাগরদ্বীপ থেকে তখন ৭০ কিলোমিটার দূরে ছিল। তবে ঘূর্ণিবায়ুর অগ্রভাগ ছুয়েছে ভূখণ্ড, মধ্যরাতে ঝড়ের চোখ বা কেন্দ্র মূল ভূখণ্ডে আঘাত করার পর থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চলবে এর তাণ্ডব।

পশ্চিমবঙ্গের উপকূলেও দানার প্রভাব পড়বে বলে জানাচ্ছে আনন্দবাজার। ৯ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত ঢেউ নিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড়টি।

পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতি থাকবে ১০০ কিলোমিটারের বেশি। দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে, বিশেষত সুন্দরবন লাগোয়া এলাকাতেও চলবে দানার তাণ্ডব।

ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, কলকাতায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ৮০ কিলোমিটার। সঙ্গে শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে কলকাতা শহরে। হুগলি, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামেও এই সতর্কতা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঝড়বৃষ্টির ‘লাল‘ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের দিকে ভূখণ্ডে আছড়ে পড়তে পারে দানা।

ঘূর্ণিঝড় সরাসরি পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান উইন্ডি ডটকমের লাইভ ট্রাকারে দেখা যায়, ভারতীয় সময় রাত ১০টায় দানার অবস্থান ওড়িশা উপকূল ছুয়ে ভূখণ্ডের প্রবল গতি নিয়ে এগোচ্ছে। দানার অগ্রভাগ ভুবনেশ্বরের ওপর বজ্রঝড়সহ অতিভারী বৃষ্টি ঝরাচ্ছে।

সরাসরি ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণকারী আরেকটি প্রতিষ্ঠান জুম আর্থও একই চিত্র দেখাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ১০ টায় তাদের লাইভ ট্রাকারে দানার অবস্থান ভুবনেশ্বরের উপকূল থেকে ভূখণ্ডে আছড়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ওড়িশয়ার ভিরতকণিকা ও পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের মাঝ দিয়ে ভুবনেশ্বরের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে দানা।

পশ্চিমবঙ্গের আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার লিখেছে, ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে জলোচ্ছ্বাস প্রবল হতে পারে।

আবহবিদদের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত উপকূলে ঢেউয়ের উচ্চতা হবে সবচেয়ে বেশি। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটা থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে ঢেউ উঠতে পারে ৯ দশমিক ৮৪ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৪৩ ফুট।

এনডিটিভি বলছে, দানার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় বৃষ্টি ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। ওড়িশা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১০ লাখ মানুষকে। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর তথ্য আসেনি।

আনন্দবাজার লিখেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কলকাতায় কোনো বিমান ওঠা-নামা করবে না বলে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়ে রেখেছে বুধবারই।

শুধু কলকাতা বিমানবন্দরই নয়, ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ১৬ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছে এনডিটিভি।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে প্রায় ৫৫০টি ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করেছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম জানাচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ দানার প্রভাবে ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ।

সংস্থাটি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত ও নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ জন্য ঢাকা-হাতিয়া, ঢাকা-বেতুয়া/আয়শাবাগ, ঢাকা-রাংগাবালী, ঢাকা-চরমোন্তাজ, ঢাকা-খেপুপাড়া নৌরুটের লঞ্চ চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এক ইঞ্জিন-বিশিষ্ট নৌযানও বন্ধ রাখা হয়েছে।

ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি ও উপকূলে ঝড়ো হাওয়া দানার গতিমুখ বাংলাদেশের দিকে না হলেও এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার দিনভর দেশের বিভিন্ন জেলায় বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের পাশাপাশি বৃষ্টি ঝরেছে ঢাকাতেও।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার সব ধরনের নৌকা নিরাপদ কূলে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকবে।

দানার ঘূর্ণিবায়ুর প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকালে বরগুনার বেতাগীতে গাছ ভেঙে মাথায় পড়ে আশরাফ আলী (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

এদিকে দানার প্রভাবে মেঘনা নদীতে সৃষ্ট ঢেউয়ের মধ্যে পড়ে চাঁদপুরের হাইমচরে এক মো. ফারুক (৩৫) নামে এক জেলে নিখোঁজ হয়েছেন।

বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গবাদি পশু। বাঁধ ভেঙে জনপদ প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছে বহু মানুষ।

সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের কৃষকরা বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।

জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, ঘারিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

খুলনা বিভাগে বেড়িবাঁধ ভাঙার শঙ্কা ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা উপকূলবর্তী এলাকায় দিনভর বৃষ্টি দেখা যায়, সেই সঙ্গে বেড়িবাঁধ ভাঙার শঙ্কায় রয়েছে মানুষ।

মোংলা বন্দর ও সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। চলছে লাগাতার বৃষ্টি, বাড়ছে বাতাসের তীব্রতাও। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়েছে, জনসচেতনতায় মাইকিং করতে দেখা গেছে

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খুলনা উপকূলজুড়ে বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া বইতে থাকে। বিকেলেও সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘরবাড়ি, গবাদি পশু ও মৎস্য ঘের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে মানুষ।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়কালে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জেলায় ৬০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোয় মানুষের অবস্থান করার মতো পরিবেশ নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে।

খুলনার বিভিন্ন উপজেলায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো।

সব স্থানে নজর রেখে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। দুর্যোগকালে স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মতো জরুরিসেবা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে সম্ভাব্য দুর্যোগ বিবেচনায় নিয়ে খুলনা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সভা করে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সতর্কমূলক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলোও প্রস্তুত রয়েছে। ঝড়ের অবস্থা বুঝে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে, উপজেলা প্রশাসক জানান, দুর্যোগ মোকাবেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করাসহ মোংলা উপজেলায় ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টার, সকল পাকা স্কুল ভবন ও ধর্মীয় উপসানালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে আশ্রয় নিতে পারবেন প্রায় ৫৫/৬০ হাজার মানুষ। এছাড়া আশ্রয়কৃত মানুষের জন্য শুকনো খাবার, জরুরি ত্রাণ সহায়তার জন্য চাল ও নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড ও গণসংযোগ বিভাগের উপ-সচিব মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার খবর ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। জাহাজগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।

বরগুনায় গাছ ভেঙে একজনের প্রাণহানি বরগুনার বেতাগীতে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে গাছ ভেঙে মাথায় পড়ে আশরাফ আলী (৬০) নামে একজন নিহত হন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আশরাফ আলী বেতাগী সদর ইউনিয়নের করুনা গ্রামের বাসিন্দা।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বরগুনায় সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়িবাঁধের ৬টি পয়েন্ট (বরগুনা সদরের বড়ইতলা ও তেঁতুলবাড়ীয়া, তালতলীর জয়ালভাঙা, বেতাগীর কালিকাবাড়ি, আমতলীর আড়পাঙাশিয়া ও পাথরঘাটার জিনতলা) মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সামান্য জলোচ্ছ্বাসে এসব স্থান ভেঙে প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ জনপদ।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. রাকিব বলেন, ভারী বর্ষণে পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালি নদীর পানি বাড়ছে। আমরা পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ প্রস্তুত রেখেছি।

দানার প্রভাবে মেঘনায় উত্তাল ঢেউ, চাঁদপুরে জেলে নিখোঁজ ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে মেঘনা নদীতে সৃষ্ট ঢেউয়ের মধ্যে পড়ে চাঁদপুরের হাইমচরে এক মো. ফারুক (৩৫) নামে এক জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি নীলকমল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নেপাল কান্দীর রইস হাওলাদারের ছেলে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাঝের চরে জেলে নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নীলকমল নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মো. আরিফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও অবৈধ উপায়ে ওই জেলে নদীতে মাছ শিকারে গিয়েছিল। তারমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রবল ঢেউয়ে সে নিখোঁজ হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে তার পরিবার এখনো পর্যন্ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি।‘