সমবায় সমিতির ইতিহাস প্রায় মানবসভ্যতার ইতিহাসের মতই প্রাচীন। বর্তমানের সমবায় সমিতির সাংগঠনিক রূপটি প্রতিষ্ঠিত হয় ইউরোপের শিল্পবিপ্লবের কিছু পূর্বেই। সমবায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে সম্মিলিতভাবে সকলের কল্যাণ হয়।
৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস আজ। এবারের সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ব দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। সমবায় সম্পর্কে জনগণকে সচেতন এবং সমবায় আন্দোলনে গতিশীলতা আনতে প্রতিবছর নভেম্বর মাসের প্রথম শনিবার দিবসটি পালন করা হয়।
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সারাদেশে আজ দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আজ (শনিবার) সকাল ১০টায় সমবায় অধিদপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান উপায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আর অর্থনৈতিক উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো ‘সমবায়’। সম্মিলিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার দ্বারা সমবায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে স্বনির্ভরতা অর্জন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, কৃষি, মৎস্য, দুগ্ধ, পরিবহণ, গৃহায়ন, শিল্প, বিমা, বাজারজাত করা সহ অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে সমবায় কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। মূলধন গঠন, বিনিয়োগ, পুষ্টিচাহিদা পূরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, আবাসন সুবিধা সম্প্রসারণ, আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, গ্রামীণ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সুবিধাবঞ্চিত নারী, তৃতীয় লিঙ্গ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনে সমবায় ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে ৫৩তম ‘জাতীয় সমবায় দিবস-২০২৪’ পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে আমি দেশের সকল সমবায়ীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, অর্থনীতিকে গতিশীল করে গড়ে তুলতে সমবায় অঙ্গনেও সংস্কার প্রয়োজন। আমাদের সমাজে উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য দক্ষ ও টেকসই সমবায় ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সমবায় খাত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নিবিড় পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে সমবায়ীদের ঋণ সুবিধা, প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমবায়ীদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কাজ করে যাচ্ছে। একটি নতুন অর্থনীতির স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমবায়কে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।