‘‘চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান রাহিমাল্লাহুর বিস্ময়কর গবেষণা মুসলিম জাতির জন্য আশীর্বাদ। তার বহুধর্মী গবেষণা বিশ্ব মুসলিমের জন্য নিদর্শন। মোট ৫৪টি বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী গবেষণালব্ধ বই আজও দীপ্তমান হয়ে আছে প্রতিটি মানুষের মনের পাঠাগারে। প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যের সর্বত্র আজ তার চিন্তাধারা শিক্ষা ও জীবন দর্শন সম্পর্কে আলোচনা-গবেষণা চলছে। তার জীবনকর্ম মূল্যায়ন ও অবদান সম্পর্কে প্রসিদ্ধ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাবিসহ দেশ বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬ জন গবেষক ৩৬টি শিরোনামে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২৭ জন গবেষক এমফিল ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। আরেক গবেষক ড. মুহাম্মদ মুকাররম আহমদ ‘ইমাম আহমদ রেযা কী আদবি খিদমত’ শিরোনামে ভারতের দিল্লী জওহারলাল ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৯৮ সালে ডি-লিট ডিগ্রি অর্জন করেন। ইসলামের নামে ধর্মান্ধতা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী তথা জিহাদি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কলম ধরে মুসলিম মিল্লাতের ইমান আক্বিদা হেফাজত করেছেন।’’
ভারত থেকে আগত আল্লামা সাইয়্যিদ শাহ মিসবাহ উল হক ইমাদী শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক বসুন্ধরা কনভেনশন (গুলনকশা) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলা হযরত কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ইমামে আযম ও আলা হযরত গবেষণা পরিষদ, জামেয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ অছিয়র রহমান আল কাদেরীর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের আহ্বায়ক উপাধ্যক্ষ আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাদেরী।
আলা হযরতের জীবনী ও গবেষণার বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তথ্য ও তাত্ত্বিক বক্তব্য রাখেন ইসলামি ফ্রন্টের মহাসচিব অধ্যক্ষ স উ ম আব্দুস সামাদ, বরেণ্য আলেম হাফেজ অধ্যক্ষ কাজী মুহাম্মদ আব্দুল আলীম রেজবী, মাও. অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আল আজহারী, শাইখুল হাদিস মোস্তাক আহমদ, মুফতি মাহমুদুল হাসান আল কাদেরী, মাও. মুহিউদ্দীন লতিফী, মাও. মাসউদ হোসাইন আল কাদেরী, ড. মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন নঈমী, অধ্যক্ষ বদিউল আলম রেজভী, মাও. সেকান্দার হোসাইন আল কাদেরী, মাও. ইকবাল হোসাইন আল কাদেরী, হাফেজ গোলাম কিবরিয়া আল কাদেরী, মাও. শহীদুল্লাহ বাহাদুর, মাও. জয়নাল আবেদীন কাদেরী, মাও. সোলায়মান আলী রেজভী, মুফতি আজিজ রেজবী, অধ্যক্ষ কাজী মুহাম্মদ নুরুল আলম, অধ্যক্ষ নুরিন্নবী রাহমানী, মাও. নুরুল ইসলাম জিহাদী, শাইজ জয়নুল আবেদীন কাদেরী, কাজী মুবারক হোসাইন ফরায়জী, আলহাজ মোহাম্মদ ইকবাল, অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, তবারক হোসেন মজুমদার, কাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন সিদ্দীকি আশরাফী, মাস্টার আবুল হোসেন, আব্দুল মালেক বুলবুল, মাঈনুল ইসলাম, ফরহাদুল ইসলাম বুলবুলি, মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ইমাম আহমদ রেযা খান ব্রেরলবি (রহ.) দর্শন ও গবেষণা উগ্রবাদ দমনে শান্তিময় বিশ্ব গড়ার পাথেয়। মানবতার মুক্তির জন্য আমরণ কাজ করে অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। ইসলামের মৌলিক বিষয়ের ওপর যখনই আঘাত এসেছে, তাৎক্ষণিক লেখনী ও বক্তব্যের মাধ্যমে তা রোধ করতে সময়ক্ষেপণ করেননি তিনি। তার জেতস্বী বক্তব্য এবং লেখনী ছিল শাণিত তলোয়ারের ন্যায়। এজন্য পথভ্রষ্ট বর্ণবাদীরা তাকে সমীহ করে চলতো। অর্থনীতি ও সৌরজগতসহ বিবিধ বিষয়ে তার দালিলিক বক্তব্য ছিল সময়ের সেরা আলোচিত বিষয়। আলা হযরতের পদাঙ্ক অনুসরণে বর্তমান প্রজন্মের জন্য অনন্য শিক্ষা মনে করেন বক্তারা। পরিশেষে মিলাদ ও কিয়াম এবং মোনাজাতের মাধ্যমে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘটে।
বিশ্বব্যাপী পরিচিত এক বিস্ময়কর অসাধারণ প্রতিভা আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা (র.) জন্ম ১২৭২ হি. (১৮৫৬ খ্রি.) ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরেলী শহরে। তার ওফাত ১৩৪০হি. (১৯২১ খ্রি.) ।