জাতীয়

দুই প‌র্বে বিশ্ব ইজতেমা : ৩১ জানুয়ারি-২ ফেব্রুয়ারি, ৭-৯ ফেব্রুয়ারি

গাজীপুর টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা এবারও দুই পর্বে অনু‌ষ্ঠিত হ‌বে। প্রথম পর্ব  হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব হবে ৭ ফেব্রুয়ারি থে‌কে ৯ ‌ফেব্রুয়া‌রি পর্যন্ত।

সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষের (জোবায়ের ও সাদ) সঙ্গে বৈঠক করে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমার দুই প‌র্বের এই তারিখ নির্ধারণ ক‌রা হয়।

বৈঠক শে‌ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এই তথ্য জানান।

ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘তাবলীগ জামায়াতের আলেমদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে আবার আলোচনা হবে। আমরা আলেমদের মধ্যে কোনো বিভেদ চাই না। পূর্বের ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ইজতেমার জন্য দুটি স্লট নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বৈঠকে বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  ছিল তারিখ নির্ধারণ।  

মাঠ হস্তান্তর, মাঠ প্রস্তুতি, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকিসংক্রান্ত কমিটি গঠন, বিদেশি অতিথিদের ভিসা প্রদান, ভিভিআইপিদের সার্বিক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, বিশ্ব ইজতেমা মাঠ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সার্বিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেন ও বাস সার্ভিস, পল্টুন ও ভাসমান ব্রিজ নির্মাণের বিষয় বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল।  

জরুরি দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মুসল্লিদের প্রাথমিক ও জরুরি চিকিৎসা প্রদান, অস্থায়ী দোকানপাট ব্যবস্থাপনা, বস্তি ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ইজতেমাস্থলে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিক্রয় মনিটরিং, মাইক সম্প্রসারণ, ইজতেমাস্থলে যাতায়াত ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণকে অবহিতকরণ, সিনেমার অশ্লীল পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ, আখেরি মোনাজাতের দিন যানজট নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ, টঙ্গীতে অনুষ্ঠেয় ফলোআপ সভার তারিখ নির্ধারণ, বিশ্ব ইজতেমায় নামাজ পড়ানোসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ, মাঠ প্রস্তুতিকরণের বিষয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমা হয়ে আস‌ছে, যা এখন মুসলিম উম্মাহর ঐতিহ্য। ‌তাব‌লিগ জামাত আ‌গে এক ছিল, বেশ ক‌য়েকবছর আগে তাদের মধ্য থেকে দুটি পক্ষ সৃষ্টি হয়। এক‌টি সাদপন্থি ও অন্যটি জুবায়েরপন্থি হি‌সে‌বে প‌রি‌চিত। সরকা‌রিভাবে প্রতিবছর বিভক্ত দুই পক্ষকে দুই প‌র্বে বিশ্ব ইজতেমার জন্য তা‌রিখ ঠিক ক‌রে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী তারা দুই প‌র্বে বিশ্ব ইজ‌তেমা আ‌য়োজন ক‌রে আস‌ছে।  তবে এই পক্ষ ভুলে দেশের সর্বস্তরের মুসলিমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে ইজমেতায় যোগ দেয় এবং দেশ ও মানুষের কল্যাণে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয়।