বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী কত দিন মাঠে থাকবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ ইন্তেখাব হায়দার খান।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর (৫ আগস্টের পর) দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী ৬ হাজারের বেশি অবৈধ অস্ত্র ও প্রায় ২ লাখ গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। অস্ত্র-গোলাবারুদ সংশ্লিষ্ট আড়াই হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, সেনাবাহিনী প্রশাসনকে ৬০ দিন সহায়তা করবে, এ তথ্য সঠিক নয়। ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কত দিন থাকব, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ, সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে কত দিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধ করার ব্যাপারে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন। এ ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে যে, কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে যেন আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হতে না দিই। সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে এটা প্রতিরোধ করার।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে এই ধরনের কোনো ঘটনা (মানবাধিকার লঙ্ঘন) যেন ঘটতে না দিই। যে ঘটনাগুলো ঘটছে, আপনারা সেগুলো জানতে পারছেন। এর বাইরে আমাদের কার্যক্রমের কারণে কতগুলো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনো কিছু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, এটা হয়ত অনেক সময় জনসম্মুখে আসে না।
কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, শুধু শিল্প খাতের কথাই যদি আমরা বলি, শিল্প খাতে এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক শ্রমিক অসন্তোষের (আনরেস্ট) ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে অনেকগুলো সহিংস ছিল, বিশেষ করে শুরুর দিকের যে ঘটনাগুলো। আমাদের সঙ্গে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীও ছিল। তারা যদি সময়মতো গিয়ে তাদের (শ্রমিক) শান্ত করার ব্যবস্থা না করতেন, হয়ত এর থেকে অনেক বেশি ঘটনা ঘটতে পারত।
তিনি বলেন, পরিস্থিতির প্রয়োজনে অনেক কিছু করতে হয়। কিন্তু, সেনাবাহিনী টার্গেট করে কাউকে মেরেছে, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রসঙ্গে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। পুলিশের কাছে অপরাধের যে তথ্য থাকে, এটা নিয়ে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ আমরা করেছি। সে অনুযায়ী, সেনাবাহিনী মোতায়েন হওয়ার পরে বা নির্বাহী ক্ষমতা পাওয়ার পরে অপরাধ কমেছে। নথিভুক্তি কমেছে। তার মানে, পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। আমাদের হয়ত প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতি হয়নি, এটা অনেকে বলতে পারেন।
ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান।