আগামী মার্চের মধ্যে নতুন শ্রম আইন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। নতুন শ্রম আইন আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ চলমান বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৭ নভেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনের কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সচিব এ কথা জানান।
এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
শ্রম খাত অস্থিতিশীল করতে তৃতীয় পক্ষ কাজ করছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘‘শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির পেছনে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মালিক এবং শ্রমিক মিলে ১২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই মালিক আছেন যাদের অন্তরীণ রাখা হয়েছে। আমরা কঠোর অবস্থানে আছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
‘‘শ্রমিকরা অনেক যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছেন, আবার অনেক দাবি অযৌক্তিক। শ্রম খাত অস্থিতিশীল করতে তৃতীয় পক্ষ কাজ করছে’’ বলেও জানান তিনি।
বেক্সিমকোতে রিসিভার (প্রশাসক) পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিলে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসন হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব।
তিনি বলেন, ‘‘প্রতি মাসে বেক্সিমকোর বেতন-ভাতা বাবদ ৮২ কোটি টাকা দিতে হয়। আমরা দ্রুত বেক্সিমকোয় প্রশাসক নিয়োগ করবো। আজ প্রধান উপদেষ্টা স্যার তার দপ্তরে কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে মিটিং করেছেন। সেখান থেকে আমাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি এটার পর বাণিজ্য ও অর্থ উপদেষ্টা স্যারসহ বসে এই মুহূর্তে যে অসন্তোষ আছে, সেটা কীভাবে সমাধান করা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা করবো।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘গতকাল গভর্নরের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, এ জিনিসটা সমাধান হয়ে যাবে যখন একজন প্রশাসক পুরোপুরি এটা বুঝে নেবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালককে প্রশাসক করা হয়েছে। এটা টেকঅফ করলে সমস্যা সমাধান হবে।’’
বেক্সিমকোর দায়দেনা অনেক বেশি জানিয়ে সচিব বলেন, ‘‘এত বড় একটা প্রতিষ্ঠানকে সরকার সহায়তা দিয়ে এর সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। সমস্যার সমাধান তাদের নিজেদেরই করতে হবে। তাদের ফ্যাক্টরিটা টেকওভার (অধীনে নিয়ে) করে কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করছি।’’
‘‘সেখানে যে সাময়িক অসন্তোষ সেটা নিয়ে সেনাবাহিনী কাজ করছে, শিল্প পুলিশ কাজ করছে। সবাইকে নিয়ে আমরা এটা অ্যাডজাস্ট করবো।’’
সচিব বলেন, ‘‘বেক্সিমকোর ফার্মাসিটিক্যালসটা এখনো লাভজনক। তাদের টেক্সটাইলটা রুগ্ন হয়ে গেছে। বেক্সিমকোর পেছনে যিনি আছেন তাকে অন্তরীণ করা হয়েছে।’’
সচিব সফিকুজ্জামান বলেন, ‘‘তাদের (বেক্সিমকো) কারণে অনেকগুলো ব্যাংক খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। জনতা ব্যাংক তাদের একটি বড় জায়গা। সেখান থেকে তাদের টাকা দেওয়ার কথা। গত দুমাসে ৮২ কোটি টাকা করে ১৬৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এ মাসে ৬২ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। ব্যাংকের সঙ্গে তাদের যে অ্যারেঞ্জমেন্ট, সেখানে ঘাটতি রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘রপ্তানির পরে তাদের ওখানে (জনতা ব্যাংক) যে টাকা ঢুকছে; তাদের (বেক্সিমকো) অনেক ব্যাকলক আছে, সেখান থেকে তাদের টাকা দেবে নাকি সেই ব্যাকলক অ্যাডজাস্ট করবে। এটা নিয়ে কথা হচ্ছে। আমাদের চার-পাঁচজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা এটা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।’’