অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, সব করা হবে বলে জানিয়েছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্ব যখন এসেছে, আমাদের সুষ্ঠুভাবে তা পালন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা।’’
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করবেন কি না, এমন প্রশ্নে নাসির উদ্দীন বলেন, ‘‘এটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ নিয়ে আগাম কিছু বলা যাবে না। সময় যখন আসবে তখন সবাই দেখতে পাবেন।’’
নির্বাচনের জন্য কতদিন সময় লাগতে পারে, জানতে চাইলে নতুন সিইসি বলেন, ‘‘নির্বাচনের জন্য তো কিছু প্রস্তুতি আছেই। অনেক ছেলে-মেয়ের বয়স ১৮ হয়ে গেছে। তাদের ভোটার তালিকায় আনতে হবে। আবার শুধু জাতীয় নির্বাচনের জন্য ভোটারের তালিকা করলে হবে না। উপজেলা নির্বাচন হবে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হবে, এর জন্য আলাদা তালিকা করতে হবে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি সততার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করব। আমার নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। তারা তা করতে পারবে বলে আমি মনে করি।’’
এদিন, নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আরও চার কমিশনার নিয়োগ দিয়ে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। রাষ্ট্রপতি এ নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
পড়ুন- ইসি পুনর্গঠন, অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীনকে সিইসি নিয়োগ
নাসির উদ্দীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে অবসরে গেছেন।
এ ছাড়া, নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পাওয়া চারজন হলেন— অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ ও সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
এর আগে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই পদে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম খুঁজতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। ২৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে সরকার।
সার্চ কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন— হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক সদস্য ছিলেন— বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী পদাধিকারবলে সদস্য হিসেবে ছিলেন— বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম এবং পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করলে নির্বাচন কমিশনারদের পদ শূন্য হয়।