বাংলাদেশ সম্পর্কে শুধু রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে নয়, একটি উৎপাদনের উৎস হিসেবেও বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্নভাবে বেলজিয়ামের ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও বেলজিয়ামের মধ্যে দ্বিতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সভায় এ আগ্রহের কথা জানানো হয়।
এছাড়া উভয়পক্ষই এনআইসিআরএইচ-বিডি ও বোর্ডেট ক্যান্সার ইনস্টিটিউট-বিই’র মধ্যে একটি এমওইউট-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যান্সার গবেষণায় সহযোগিতার আশা প্রকাশ করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরামর্শ সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রাষ্ট্রদূত ও অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং বেলজিয়াম প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বেলজিয়ামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মহাপরিচালক জেরোইন কুরেম্যান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বেলজিয়ামের অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত দিদিয়ের ভান্ডারহাসেল্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও এই পরামর্শ সভায় যোগ দেন।
এ বছরের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থান এবং আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পদ্ধতিগত সংস্কারসহ অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোকপাতের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়।
রাষ্ট্রদূত ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে প্রস্তুত থাকায় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য বেলজিয়ামকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের কো-চেয়ার ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রানী ম্যাথিল্ডের বাংলাদেশ সফর এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথা স্মরণ করেন এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য বেলজিয়ামের অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করেন।
এ প্রসঙ্গে কো-চেয়ার ইউএনএসজিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি সম্পর্কে অবহিত করেছেন, যাতে ২০২৫ সালের প্রথম দিকে একটি সর্ব-স্টকহোল্ডার বৈঠকের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
২০২৯ সালের পরেও জিএসপি প্লাস সুবিধা এবং ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রেক্ষাপটে উত্তরণের পর্যায়ে থাকা দেশগুলোর জন্য অতিরিক্ত ৬ (ছয়) বছরের আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা (আইএসপি)’র জন্য বাংলাদেশ ইইউ’র মাধ্যমে বেলজিয়ামের সমর্থন চেয়েছিল। এই বিষয়ে বেলজিয়াম পক্ষ যথাযথ বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।
উভয়পক্ষই লস অ্যান্ড তহবিলের দায়-দায়িত্ব বাস্তবায়নের সাথে সাথে টেকসই পদ্ধতিতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অস্তিত্বের হুমকি ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন মোকাবিলা করতে একত্রে কাজ করতে সম্মত হয়।
পরামর্শ সভায় ইন্দো-প্যাসিফিক, ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে সংঘটিত নৃশংসতা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়।
উভয়পক্ষই বাংলাদেশ-বেলজিয়াম তৃতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ ২০২৫ সালে পারস্পরিক সুবিধাজনক তারিখে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে।