জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানসহ কয়েকজনের সঙ্গে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. নাদিরা সুলতানার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। পরে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর জানিয়েছেন, সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব ও উপ-সচিব পদে ক্যাডারবহির্ভূত কর্মচারীদের নির্দিষ্ট হারে পদোন্নতি পাওয়ার কোটা রয়েছে। কিন্তু, ক্যাডারবহির্ভূত কর্মচারীরা বিগত দিনে সেটা পরিপূর্ণভাবে পাননি। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জোরালো দাবি জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরইমধ্যে কমিটির অন্য সদস্যরা এ সমস্যা সমাধানে একমত পোষণ করে একটি প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু, নাদিরা সুলতানা প্রাথমিক অবস্থায় স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানান।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জিয়াউর রহমানসহ কয়েকজন কর্মচারী নাদিরা সুলতানার স্বাক্ষর আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যান। তখন নাদিরা জিয়াউরের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন। একপর্যায়ে জিয়াউর অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে প্রথমে সচিবালয়ের ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে রাজধানীর কর্মচারী হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।
এদিকে, যুগ্ম সচিবের খারাপ আচরণের খবর ছড়িয়ে পড়লে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় গিয়ে ওই যুগ্ম সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়া ও কর্মচারীদের সাথে অমানবিক, অসৌজন্যমূলক ও আক্রমণাত্মক আচরণের অভিযোগে তার শাস্তির দাবি জানিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের কোনো ক্ষতি হলে তার দায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে বহন করতে হবে।
তারা অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব, ড. নাদিরা সুলতানাকে (পরিচিতি নং-১৫২১৪) অবিলম্বে সচিবালয় থেকে বদলি করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর বলেছেন, ‘‘অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব, ড. নাদিরা সুলাতানা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশ ও পদ সংরক্ষণ সংক্রান্ত সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। তিনি ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে দীর্ঘদিন সচিবালয় অবস্থান করেছেন এবং এখনো সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন।’’
তিনি নাদিরা সুলতানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।