জাতীয়

চিন্ময় দাস গ্রেপ্তারের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে, জাতিসংঘকে জানাল বাংলাদেশ

সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘ ও জেনেভায় অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে এ কথা উল্লেখ করেন। খবর বাসসের।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে একটি বার্তায় জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সংখ্যালঘু ফোরামের ১৭তম অধিবেশনে এ বিবৃতি দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।

বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে শ্রী চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার বিষয়ে কিছু বক্তা বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘দুঃখজনকভাবে, যখন বাংলাদেশের জনগণ ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, তখন কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী অতিরঞ্জিত ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন ছড়াচ্ছে এবং সংখ্যালঘু নিপীড়ন সম্পর্কে ভুল তথ্য দিচ্ছে। দুঃখজনকভাবে, এই ফোরামেও আমরা এমন প্রচেষ্টা লক্ষ করেছি।’’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘বৈশ্বিক গণমাধ্যম এ রকম অনেক মিথ্যা প্রচারণা খারিজ করে দিয়েছে। তদুপরি, বিদেশি সাংবাদিকদের সরেজমিন পরিস্থিতি দেখার জন্য বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত রয়েছে সরকার।’’

ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক বাংলাদেশি স্বাধীনভাবে তার ধর্ম পালন করতে বা মতামত প্রকাশ করতে পারেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের সরকারের অঙ্গীকার।’’

রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘‘শীর্ষ নেতৃত্ব সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতাদের তাদের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন এবং সরকার প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে এটি বারবার প্রমাণ করেছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে দুজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’’

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক একজন মুসলিম আইনজীবীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড সত্ত্বেও সরকার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে সব ধর্মের নেতাদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি শান্ত রেখেছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধ করেছে। সরকার সর্বদা সতর্ক রয়েছে এবং যেকোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাবে।’’

৫ আগস্টের পরের সহিংসতার মূল কারণ ছিল রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত, সাম্প্রদায়িক নয় বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘এর প্রভাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দলীয় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কেবল মুষ্টিমেয় কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নয়।’’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের পুরো সমাজ একত্রিত হয়ে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে।’’

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘‘অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সব ধর্মের মানুষের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সমর্থন পেয়েছে।’’