অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তোহিদ হোসেন বলেছেন, ‘‘আমরা ভারতের সাথে সুসম্পর্ক চাই। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী।’’
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয়দের বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকে ‘উসকানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি জানান, পরস্পরের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে ভারতের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখতে চায় বাংলাদেশ।
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমাদের অবস্থান থেকে ভারতের সাথে সুন্দর সম্পর্ক চাই। অন্তরের চেয়ে স্বার্থটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পরস্পরের স্বার্থটা সামনে রেখে চলা এখন মূল বিবেচ্য বিষয়।’’
পররাষ্ট উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দেশের সমসাময়িক বিষয়ে কূটনীতিকদের জানার বিষয় ছিল। আমি এটা বলার চেষ্টা করিনি যে, কোথাও কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা যা চিহ্নিত করা যাচ্ছে, আমরা সমাধানের ট্রাই করছি।’’
প্রেস ব্রিফিংয়ে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘অনেক বেশি গণ্ডগোল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সবার সহযোগিতায় তা আমরা মোকাবিলা করতে পেরেছি। প্রতিবছর দু’-একটি ঘটনা দেশে থাকে। যারা করে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এ দেশে কেউ কোনো আক্রমণের শিকার হবে না, সেটি নিশ্চিত করেছে সরকার, আর তা করা হবেও। ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকদের তা জানানো হয়েছে।’’
সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তোহিদ হোসেন
মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা যে বার্তা দিতে চাই—এ সরকার কোনো সাম্প্রদায়িক কার্যক্রম বরদাস্ত করবে না। এই মেসেজটি সবাইকে দিতে চাই। এ ব্যাপারে আইন তার গতিতে চলবে।’’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘কোনো মানুষ নিজের ধর্মের কারণে ছোট হবে না, সরকার এ বিষয়ে তার অবস্থান পরিষ্কার রেখেছে, তা জানানো হয়েছে। কিছু ঘটনা ঘটেছে, তা অস্বীকার করা হচ্ছে না। তবে যারা করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশ ইস্যুতে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার অবস্থান থেকে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া উচিত না।’’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে ভুল ধারণা তৈরি করছে ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশ। সেটি পরিষ্কার করতে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রকৃত পরিস্থিতি জানানো হলো আজ।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিটেনের সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেটি একপেশে। এ নিয়ে লন্ডনের সাথে কথা বলবে ঢাকা।’’