জাতীয়

‘ভারত চাইলে শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য বাড়িয়ে সহায়তা করবে বাংলাদেশ’

ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী হাইকমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে দেশটিকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সহায়তা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সেক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে সৈন্য পাঠিয়ে বাংলাদেশ ভারতকে সহায়তা করতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এমনটি বলেন উপদেষ্টা আসিফ।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘যদি ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী হাইকমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সহায়তা চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে শান্তিরক্ষা মিশনে সৈন্য সহায়তা বাড়িয়ে সহযোগিতা করতে পারে বাংলাদেশ।’’

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ নিয়ে ভারতে বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ-আন্দোলন করছে।

এরই মধ্যে সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা অধিবেশনে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার সময় হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব দেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে সংসদে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিও দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ অন্য দেশ। এটা আমার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। প্রয়োজনে ওই দেশে কেন্দ্রীয় সরকার শান্তির বার্তা নিয়ে প্রতিনিধি পাঠাক। কেন্দ্র জাতিসংঘের কাছে আবেদন করুক, শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর জন্য।’’

এ বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাবও তিনি কেন্দ্র সরকারকে দেবেন বলে জানিয়েছেন মমতা।

একই দিন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলার পর তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ছাড়া সহকারী হাইকমিশনে ভাঙচুর করা হয়।

হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সমর্থকেরা এ হামলা চালায়। যদিও এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারত।

এর আগে কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ায় ভারতীয়রা।

আগরতলার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ বলে আজ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতে নানা ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করছে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে আগ্রাসনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

আগরতলার ঘটনা ‘কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘন’ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সহকারী হাইকমিশনের সব সদস্য প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাংলাদেশ সরকার জোর দিয়ে বলতে চায়, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অপবিত্রতা একটি নৈমিত্তিক উদাহরণ হয়ে উঠেছে। গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায়ও একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছে।