কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বৈষম্যমুক্ত অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়িস্থ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মিলনায়তনে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দেশের বেকারত্বের হার হ্রাসে কৃষিখাতকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের কৃষির উপর নির্ভরশীল ৭০ শতাংশ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারলে সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।’’
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘কৃষি খাতে প্রায়োগিক গবেষণা বাড়াতে হবে। প্রতিটি গবেষণার ফলাফল কৃষক পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। শিল্পায়নের নামে যাতে উর্বর কৃষি জমি অকৃষি খাতে চলে না যায়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।’’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘‘আমরা প্রতি বছর সার খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়ে আসছি। সার বরাদ্দের শর্তে বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় এই ভর্তুকি কতদিন চলমান রাখা সম্ভব তাও ভাবনার বিষয়। কীভাবে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো যায়, সে সম্পর্কে গবেষণা জোরদার করা প্রয়োজন।’’
উপদেষ্টা জলাধার রক্ষা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ, বনভূমি রক্ষা ও নতুন বনায়ন করা, যথাযথ গবেষণার মাধ্যমে প্রাকৃতিক কৃষি পদ্ধতি অবলম্বন করা, মাটির সঠিক ব্যবহার এবং পুনঃব্যবহার নিশ্চিত করার প্রতি কৃষিবিদদের অধিকতর যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এখন সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদ হচ্ছে। যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে। পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য নেওয়া হয়েছে নানা প্রকল্প। এ সকল কার্যক্রমের সাফল্য নির্ভর করবে মাটির সুস্বাস্থ্যের ওপর। যেহেতু ক্রমাগতভাবে আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আবাদি জমির পরিমাণ কমছে, তাই উন্নত জাত ও ফসল নিবিড়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে অধিক খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. এম জহির উদ্দিন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফএও-এর বাংলাদেশস্থ প্রতিনিধি ড. জাউকিন শি।