সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশে মৎস্য চাষে ব্যাপক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে হাতে নেওয়া হয়েছে ‘ফুডটেক বাংলাদেশ’ শীর্ষক পাঁচ বছরের একটি কর্মসূচি। এতে অর্থায়নে করছে নেদারল্যান্ডস সরকার। কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে নেদারল্যান্ডসের লারিভ ইন্টারন্যাশনাল এবং বাংলাদেশের লাইটক্যাসল পার্টনারস।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) লাইটক্যাসল পার্টনারসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
‘ফুডটেক বাংলাদেশ’ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত। এটি জলজ কৃষি ও মৎস্য উন্নয়নের ওপর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের কর্মসূচি। ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্সি প্রতিষ্ঠান লারিভ ইন্টারন্যাশনাল ও লাইটক্যাসল পার্টনারসের মাধ্যমে যৌথভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ডাচ সরকার এবং বেসরকারি অংশীদাররা বাংলাদেশে জলজ ও মৎস্য চাষের প্রতিযোগিতা ও স্থায়িত্ব বাড়াতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর অংশ হিসেবে এ প্রকল্পের আওতায় ২০২২ থেকে ২০২৭ সাল নাগাদ ৬ মিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ সহ-বিনিয়োগ করেছে।
কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মাঝিয়ালীতে একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি সারা ভ্যান হোভে। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন।
এই কেন্দ্রের মাধ্যমে ময়মনসিংহের স্থানীয় ২০০ জনের বেশি মৎস্যচাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নেদারল্যান্ডসের কৃষি প্রযুক্তির সহায়তায় এ বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এরকম একটি পদ্ধতি হচ্ছে রিসার্কুলেটিং অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেম (আরএএস), যা খামার পদ্ধতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এতে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ছোট পুকুরে মাছ চাষের অনুশীলন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে (সিওই) বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে দর্শকরা এই প্রযুক্তিগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সেক্রেটারি সারা ভ্যান হোভে বাংলাদেশি জলজ, কৃষি ও মৎস্য চাষের সম্ভাবনা এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এর পাশাপাশি তিনি খাদ্য নিরাপত্তায় পুষ্টি ও খাদ্যের মান বজায় রাখার স্বার্থে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উৎপাদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিরা তাদের ভূমিকা ও কার্যক্রমবিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন। কনসোর্টিয়ামের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিল: লাইটক্যাসল পার্টনারস, ফিশটেক লিমিটেড এবং ডি হিউস অ্যানিমেল নিউট্রিশন।
ফুডটেক বাংলাদেশ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো—সেন্টার অব এক্সিলেন্সে (সিওই) প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা। দেশে এ ধরনের চারটি কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এগুলো হবে খুলনা, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে। প্রতি কেন্দ্রে ২০০ জন করে মোট ৮০০ জন মৎস্যচাষিকে নেদারল্যান্ডসের আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।