ভারতের ওড়িশা রাজ্যের প্যারা দ্বীপে আটকা ৭৮ জন বাংলাদেশি জেলেকে ফিরিয়ে দিতে আলোচনা শুরু করেছে ভারত সরকার। জেলেদের কোনো মামলা ছাড়াই বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনা শেষে আটক জেলেদের আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইনে (আইএমবিএল) বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্যারা দ্বীপ পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেনডেন্ট (ডিএসপি) সন্তোষ জেনা।
ডিএসপি জেনা জানান, ভারতীয় কোস্টগার্ডের হাতে আটকের পর বাংলাদেশি দুই জাহাজের সব জেলেকে প্যারা দ্বীপ মেরিন থানায় আটক রাখা হয়। এ সময় তাদের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি খাদ্য ও পোশাক দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারও ৭৮ জন বাংলাদেশি জেলেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়।
ভারতীয় কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে পাওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, গত বুধবার কোস্টগার্ডের নিয়মিত নজরদারির সময় আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইনের (আইএমবিএল) কাছ থেকে এফভি লায়লা-২ ও এফভি মেঘনা-৫ নামের দুটি ট্রলারসহ বাংলাদেশি জেলেদের আটক করা হয়। ওই জাহাজে থাকা ৭৮ জন সদস্যকে ওড়িশার প্যারা দ্বীপে নিয়ে আসা হয়। তাদের আলাদাভাবে ভারতীয় কোস্টগার্ড, ক্রাইম ব্রাঞ্চ এবং সিআইএফ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত আছে। শিগগিরই এটি নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যদি তাদের হস্তান্তরের নির্দেশ আসে, তাহলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আইন মেনে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, বাংলাদেশি জলসীমায় প্রবেশ করে ভারতীয় কোস্টগার্ড বাংলাদেশি জাহাজ আটক করেছে- এমন বক্তব্যে আটক এক বাংলাদেশি জেলে পুলিশের উপস্থিতিতে ওড়িশার সাংবাদিকদের জানান, ভুলবশত আমরা ভারতীয় জলসীমায় চলে এসেছিলাম। এখানে পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। দুটি জাহাজে ৭৮ জন জেলে ছিলেন। আমাদের কাছে ১০০ টন ওজনের মাছ আছে। যার মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় এক কোটি টাকা হবে।
আরেকজন বাংলাদেশি জেলে বলেন, ‘‘মাছ ধরার সময় পথ ভুলে ভারতের জলসীমায় চলে এসেছিলাম। এজন্য ভারতীয় বাহিনী আমাদের আটক করেছে। আমরা এখানে পুরোপুরি নিরাপদ রয়েছি। আশা করছি ভারত সরকার আমাদের দ্রুত হস্তান্তর করবে।’’