আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ সাবেক কর্মকর্তাকে পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
এ সময় তার কার্যালয়ের সামনে বারান্দায় বেশ কিছুসংখ্যক বঞ্চিত কর্মকর্তা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।
বঞ্চনা নিরসন কমিটির সুপারিশ ও সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘‘চাকরি যারা করেন, তারা জানেন, ন্যূনতম একটি প্রক্রিয়ার ব্যাপার আছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশনা লাগবে। তবে ইতিবাচক। চাকরির কিছু বিধিবিধান আছে। এটি মানতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে সংক্ষিপ্ত সময়ে এ প্রক্রিয়া শেষ হবে আশা করছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘এটি ঠিক পদোন্নতি না। এটি হল সামাজিক মান–মর্যাদা। আর্থিক সুবিধা ও পদ-পদবি দিয়ে একটি সরকারি আদেশ জারি হবে। এর ভিত্তিতে অর্থনৈতিক আদেশে তারা এই টাকা পাবেন। সরকার নীতিগতভাবে একমত। একটু সময়ের ব্যাপার।’’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘‘পদে বসানো এক বিষয় আর পদমর্যাদা এক বিষয়। এটি হল ওই পদে মর্যাদা দিয়ে সরকারি আদেশ দেওয়া হবে। হিসাবটি করবে এজি অফিস। তাদের বিজ্ঞানসম্মত নিয়ম আছে।’’ পেনশনের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা হবে বলে জানান সচিব।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার পর আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা জনপ্রশাসন সচিবের দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। তাদের অনেকেই মেঝেতে বসে পড়েন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য দপ্তরের বাইরে এলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েন।
এ সময় বিক্ষুব্ধ বঞ্চিত কর্মকর্তারা উচ্চস্বরে সচিবের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। কেউ কেউ জনপ্রশাসন সচিবকে পদত্যাগ করতে বলেন।
তখন জনপ্রশাসন সচিব তাদের জানান, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তার কাছ থেকে কোনো ফাইল আসেনি। ওই ফাইল আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তা প্রসেস করবেন।
এরপরও সচিবের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তারা। পরে জনপ্রশাসন সচিব নিজের দপ্তরে ঢুকে পারেন।
গত ১০ ডিসেম্বর পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। কমিটির প্রধান ও সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান কমিটির অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করেন।
কমিটি ৭৬৪ জনকে উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে।