জাতীয়

খাদ্য ব্যবস্থা আধুনিকায়নে জাতীয় সংলাপ

সমৃদ্ধ জাতি গড়ার অন্যতম চাবিকাঠি নিরাপদ খাদ্য। তাই, খাদ্য ব্যবস্থা আধুনিকায়নে সরকার, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদার ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় ঢাকায় একটি জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেয় আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (আইএফএডি), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং উন্নত পুষ্টির জন্য বৈশ্বিক জোট (গেইন)।

এই সংলাপের লক্ষ্য হলো—জাতীয় কর্মসূচিতে উদ্ভাবনী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু-সহনশীল সমাধানকে সংহত করা এবং একসঙ্গে কাজ করে টেকসই, সহনশীল, স্বাস্থ্যকর ও সমতাভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতীয় খাদ্য ব্যবস্থা পথনির্দেশনা রচনা করা।

এই জাতীয় সংলাপে সরকারি সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, একাডেমিয়া, নাগরিক সমাজ এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রের ওপর আলোকপাত করেন, যা খাদ্য ব্যবস্থা রূপান্তরের জন্য অপরিহার্য। এগুলো হলো: সকল মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত করা; প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান; সমতাভিত্তিক জীবিকা, শোভন কর্ম ও ক্ষমতায়িত সম্প্রদায়; দুর্বলতা, আঘাত ও চাপ মোকাবিলায় সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়নের মাধ্যম– সুশাসন।

অনুষ্ঠানে এসডিজিবিষয়ক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেছেন, “বাংলাদেশে টেকসই, সহনশীল, স্বাস্থ্যকর এবং সমতাভিত্তিক খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তর একটি চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ উভয়ই। সকল মানুষের পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান, সমতাভিত্তিক জীবিকা উন্নয়ন, সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর শাসন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে আমরা এমন একটি খাদ্য ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি, যা শুধু আমাদের জনগণকে খাদ্য সরবরাহে সক্ষম নয়, বরং এটি পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হবে।”

এই আলোচনা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল সরাসরি বাংলাদেশের আবর্তিত জাতীয় খাদ্য ব্যবস্থা পথনির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত হবে। তা বর্তমানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর (আইএফএডি, এফএও, ডব্লিউএফপি, ডব্লিউএইচও, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ), গেইন, সিজিআইএআর, আইএফপিআরআই প্রভৃতির সহায়তায় হালনাগাদ করা হচ্ছে। যাতে এটি দেশের জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) ৩.০ এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার (এনএপি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি বলেছেন, “আমাদের শূন্য ক্ষুধা এবং দারিদ্র্য নির্মূলের সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে সকল খাতের অংশীদারদের নিয়ে কার্যকর সমাধানগুলোর বৃহৎ পরিসরে বাস্তবায়ন প্রয়োজন।”

ডেনমার্কের সহায়তায় জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা সমন্বয় কেন্দ্রের মাধ্যমে আয়োজিত এই ইভেন্টটি ২০২১ সালের জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলন এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত UNFSS+2 স্টকটেকিং মুহূর্তে বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রদর্শনের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এই সংলাপ জাতীয় নীতি ও স্থানীয় পরিকল্পনার মধ্যে সমন্বয় এবং বহুপক্ষীয় সহযোগিতার উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় খাদ্য ব্যবস্থা পথনির্দেশনা কার্যকর করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করছে।

সংলাপে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিপুষ্টি ইউনিটের গবেষণা পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুইন লুইস, আইএফএডির কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ভ্যালেন্টাইন আচাঞ্চো, গেইনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার এবং এফএওর প্রতিনিধি ড. জিয়াওকুন শি।