বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম শমশের আলীর সাথে আজ ইরানের উচ্চপদস্থ এক প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাতে অধ্যাপক ড. এম শমশের আলী বলেন, ‘‘ইরান ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ একটি দেশ। জ্ঞান-বিজ্ঞানে দেশটির অগ্রগতি আজ চোখে পড়ার মতো। আর দেশটির ভাষা ফারসি অত্যন্ত মিষ্টি একটি ভাষা। আমরা কথাবার্তায় প্রতিনিয়ত যেসব শব্দ ব্যবহার করি তার মধ্যে অনেক শব্দই ফারসি। আমরা যদি এসব শব্দ বাদ দিয়ে কথা বলতে চাই তাহলে হয়তো আমাদের কথা বলাই বন্ধ হয়ে যাবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ইরান অনেক বড় বড় মনীষীর দেশ। এই দেশটির যেসব বড় বড় ব্যক্তিত্ব রয়েছেন তাদের খ্যাতি কেবল দেশটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই বরং তাদের খ্যাতি বিশ্বময়। বিশেষ করে ইরানি কবি শেখ সাদি, কবি হাফিজ ও ওমর খইয়াম বিশ্বসাহিত্যের এক একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাদের কর্মপরিধি কেবল সাহিত্য ও সংস্কৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের বিচরণ ছিল। তাদের সাহিত্যকর্মের মধ্যে লুকিয়ে আছে কোরআনিক সাইন্স, বিশ্ব পরিকল্পনা ও অর্থনীতিসহ আরো অনেক দিক। আমি মনে করি তাদের রেখে যাওয়া জ্ঞানই বর্তমান বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বিশ্ব পরিকল্পনা ও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। এসব মহান ব্যক্তির বিজ্ঞান ও সাহিত্যকর্মকে বিশ্বময় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে চাইলে তাদের নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা করতে হবে এবং তাদের গ্রন্থসমূহকে মূল ভাষা থেকে অনুবাদ করতে হবে। সেই সাথে মূলভাষা ও তার উচ্চারণ ইংরেজিতে পাশাপাশি থাকা প্রয়োজন। নিজ ভাষা ও ফারসি ভাষায় যারা পারদর্শী তাদের মাধ্যমে এসব বইয়ের অনুবাদ করতে হবে যাতে এসব বই থেকে পাঠকরা যথাযথ জ্ঞান অন্বেষণ করতে পারেন।’’
সাক্ষাতে ড. এম শমশের আলী কোরআনিক সাইন্সে তার গবেষণাকর্মের কথাও তুলে ধরেন।
এ সময় ইরানের প্রতিনিধিদলের প্রধান ওয়ার্ল্ড অ্যাসেম্বলি অব আহলুল বায়েতের মহাসচিব আয়াতুল্লাহ রেজা রামাজানি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম দেশ। ভ্রাতৃপ্রতিম দেশটির সাথে ইরানের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা চাই এই সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে। একই সাথে ফারসি সাহিত্য যাতে বিশ্বময় আরো ছড়িয়ে পড়ে এবং মূল ভাষা থেকে ফারসি গ্রন্থের অনুবাদ পাঠকদের হাতে পৌঁছে সে ব্যাপারে ইরান সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’’
কোরআনিক সাইন্সে ড. শমশের আলীর গবেষণার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘সাধারণত বিজ্ঞানীরা ইসলাম ও কোরআন নিয়ে খুব একটা ভাবেন না। অথচ ড. শমশের আলী একজন পদার্থ বিজ্ঞানী হয়েও কোরআন নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন।’’ তিনি ড. শমশের আলীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মদী ও ইরানের রিলিজিয়ন্স ও ডেনোমিনেশনস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইয়্যেদ মাহদী মুসাভী উপস্থিত ছিলেন।