জাতীয়

পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে যাবে বাংলাদেশ : মুহিত

বিশেষ প্রতিনিধি : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, তৈরি পোশাক খাতে খুব শিগগিরই বাংলাদেশ শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হবে এবং ২০৩০ সালে এ খাত থেকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এ সময় এবারের বাজেটে রিফাইনারি খাতে বরাদ্দ রাখার কথাও জানান তিনি।

 

হবে এবং সরকার কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন টন পেট্রোলিয়াম ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি রিফাইনারি স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, সোমবার সচিবালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি হোসেন খালেদের  নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা  তার কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে এ কথা বলেন তিনি। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

ডিসিসিআই-র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি হুমায়ুন রশিদ, সহ-সভাপতি শোয়েব চৌধুরী, পরিচালক ও প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান খান, পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, আসিফ এ চৌধুরী, খ. আতিক-ই-রাব্বানী, মোক্তার হোসেন চৌধুরী, নেসার মাকসুদ খান, ওসমান গণি, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি হায়দার আহমদ খান এবং ডিসিসিআই মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির এ বৈঠকে  উপস্থিত ছিলেন।

 

বৈঠকে ডিসিসিআইর পক্ষ থেকে ১৪ দফা সুপারিশ অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়।

 

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। এরফলে বিপিসি তাদের দীর্ঘদিনের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিয়েছে। এখনো আমরা জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারের দাম সমন্বয় করিনি। এ ক্ষেত্রে বাস্তবভিত্তিক সমন্বয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

অর্থমন্ত্রী দেশের করদাতাদের জন্য ট্যাক্সকার্ড দেওয়ার বিষয়েও  সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।

 

ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ  দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার লক্ষে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানো, গ্যাস- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট নিরসনসহ অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আগামী বাজেটে কালো টাকা সাদা করার উদ্যোগ বন্ধ করায় সরকারকে  সাধুবাদ জানান। পাশাপাশি, কালো টাকার উৎস বন্ধ করা এবং বাজেটে নির্ধারিত করের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে তা বৈধ করার সুযোগটিকে শুধুমাত্র উৎপাদানশীল খাতে ব্যবহারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

 

ডিসিসিআই সভাপতি কর আইনসহ সকল আইন ব্যবসাবান্ধব করার প্রস্তাবের পাশাপাশি- নতুন কর আইনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট আরোপেরও প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তিগত আয়কর সীমা দুই লাখ ৭৫ হাজার  টাকা করার প্রস্তাব করেন। এ ছাড়াও তিনি মার্চেন্ট ব্যাংক-এর ক্ষেত্রে করপোরেট করের হার ৩৭ দশমিক ৫ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা এবং লিস্টেড কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট করের হার ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে খসড়া পিপিপি আইনটি দ্রুত প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি, বাজেটে পিপিপি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন হোসেন খালেদ। এ সময় রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেশব্যাপী করের আওতা বাড়ানোরও সুপারিশ করেন তিনি।

 

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চলতি বছরের শুরুতে কয়েক মাসের অবরোধ কর্মসূচির ফলে দেশের ব্যবসায়ীরা আশানুরূপভাবে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেননি।  যার ফলে তাদের জন্য সঠিক সময়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিভিন্ন বন্দর থেকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পণ্য খালাস না হওয়ায় ব্যবসায়ীদেরকে অতিরিক্ত হারে বন্দর শুল্কসহ বিভিন্ন চার্জ ও জরিমানা বহন করতে হয়েছে।’

 

এ বিবেচনায় রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের ক্ষতি পোষাতে সব ধরনের বন্দর শুল্ক ও জরিমানা ন্যূনতম ৫০ শতাংশ মওকুফের আহবান জানান তিনি।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৫/হাসনাত/সুমন