ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডে র্যাবের হাতে আটক যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে রিমান্ডে নিয়ে এর পেছনের গডফাদার বা প্রশ্রয়দাতাকে খোঁজা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১ অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।
রোববার রাজধানীর কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযানের পর সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
‘রিমান্ডে আনা সাপেক্ষে জানতে পারব তার (সম্রাট) কাছে কি কি রয়েছে। কতগুলো মামলা হয়েছে। তার অপরাধ, তার গডফাদার কে, কে কে তার পৃষ্ঠপোষক ছিল, এগুলো প্রত্যেকটি বিষয়ই তদন্ত সাপেক্ষ রিমান্ডে আনার পর জানাতে পারব’, বলেন র্যাবের এই মুখপাত্র।
সম্রাট ও আরমানের কারাদণ্ড
সম্রাটের অফিসে অভিযান পরিচালনার সময় সেখানে বন্য প্রাণীর চামড়া পাওয়ায় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ম্যাসিস্ট্রেট তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বলে জানান সারওয়ার-বিন-কাশেম।
এদিকে কুমিল্লায় আরমানকে আটকের পরই তাকে মদ্যপ অবস্থায় পায় এবং তার কাছে বিদেশি মদ থাকার অপরাধে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, ‘সম্রাটকে খোঁজার জন্য অনেকগুলো গোয়েন্দা টিম মাঠে ছিল। আমরা আজ ভোর বেলায় কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থেকে তার সহযোগী আরমানকে আটক করি। এখানে উল্লেখ করতে চাই, আরমানকে আটক করার সাথে সাথে ম্যাসিস্ট্রেট তাকে মদ্যপ অবস্থায় পায় এবং তার কাছে বিদেশি মদ থাকার অজুহাতে তাকে ছয় মাসের জেল দেয়। পরবর্তীতে সম্রাট এবং আরমানকে ঢাকায় নিয়ে আসি। সম্রাটের দেয়া তথ্য মতে আজ তার অফিসে অভিযান পরিচালনা করি।’
‘আমরা এখান থেকে একটি বিদেশি অস্ত্র, একটি ম্যাগাজিন এবং পাঁচ রাউন্ড গুলি, প্রায় ১ হাজার ১৬০ পিস ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি বন্য প্রাণীর চামড়া, দুটি ইলেকট্রিক শক দেয়ার মেশিন এবং দুটি লাঠি উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আমরা আমাদের পরবর্তী তদন্ত অব্যাহত রাখব এবং এর সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট ছিল তাকে রিমান্ডে আনা সাপেক্ষ বিস্তারিত জানাতে পারব।’
তিনি বলেন, সম্রাট ও আরমান দুজনকে আটক করে ঢাকায় আনা হয়েছিল। আরমানকে পাঁঠিয়ে দেয়া হয়েছে সেখানের জেলহাজতে। সম্রাট আমাদের কাছেই আছে। তার নামে যে মামলাগুলো হবে তার প্রেক্ষিতে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থাগুলো নেব।’
সম্রাটের নামে মাদকের মামলা, অস্ত্র মামলা ও বন্য প্রাণীর চামড়ার মামলা হবে বলেও জানান সারওয়ার-বিন-কাশেম।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, সম্রাটের অফিসে অভিযানে তিন ধরনের অপরাধের আলামত পেয়েছেন তারা। এই তিন ধরনের অপরাধেই মামলা হবে।
প্রসঙ্গত, রোববার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকা/পারভেজ/সাইফ