বাবা আমার কাছে এক অনুভূতি। আমার ভালো বন্ধু। মূলত মায়ের সাথে আমার বেশি সখ্য ছিল। আমি ছোটবেলা থেকেই আমার মাকে সবকিছু বলতাম। বাবার কাছে বলতে ভয় লাগত বা বলতে একটু ইতস্তত বোধ করতাম। ছোটবেলা থেকেই আমার সব আবদার পূরণ করেছেন তিনি । আমাকে স্কুলে ভর্তি, নিয়ে যাওয়া, পছন্দের খাবার কিনে দেওয়া সবই তিনি করেছেন। যেদিন প্রথম স্কুলে যাই, সেদিন বাবাই আমাকে নিয়ে গিয়েছিল। আমি কী হবো, সেটা আমার ওপরেই ছেড়ে দিয়েছিল। একবারও জোর করেনি যে, তুমি এটা হও, ওটা হও।
ক্লাস সিক্সে পড়া অবস্থায় যখন সামাজিক কাজ শুরু করি টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে, বাবাই তখন টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতেন, উৎসাহ দিতেন এবং ভালো কাজগুলো করতে বলতেন। ২০১৩ সালে আমি হারাই আমার মমতাময়ী মাকে। এরপর বাবাকে আরো পরম বন্ধু হিসেবে পাই। তার সাথে গড়ে উঠে অকৃত্রিম বন্ধুত্ব। তিনি সাহস দেন এগিয়ে যাবার। তার জন্যই আজ আমি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুব সংগঠক। শৈশব থেকে অর্থাৎ প্রায় ১৬ বছর ধরে সামাজিক কাজ করে যাচ্ছি। সামাজিক পরিসেবার মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি, স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবাধিকার রক্ষা, টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষায় দেশে এবং বহির্বিশ্বে কাজ করে যাচ্ছি ময়ূরপঙ্খী শিশু-কিশোর সমাজকল্যাণ সংস্থার মাধ্যমে ।
পেয়েছি মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত বিশ্ব যুব শান্তি সম্মেলনে ‘গ্লোবাল পিস অ্যাওয়ার্ড’, ভারতে ‘আন্তর্জাতিক যুব পুরস্কার’, দুবাইয়ে ‘আন্তর্জাতিক স্কুল অ্যাওয়ার্ড’, থাইল্যান্ডে ‘আন্তর্জাতিক এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড’। এছাড়া, দেশ-বিদেশ থেকে পেয়েছি বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার এবং সম্মাননা ।
প্রসঙ্গত, প্রায় শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও নারীকে বিনাবেতনে পড়াচ্ছি। প্রতিষ্ঠা করেছি ময়ূরপঙ্খী আদর্শলিপি স্কুল, ময়ূরপঙ্খী কোরআন শিক্ষা আসর, ময়ূরপঙ্খী নারী শিক্ষাকেন্দ্র, ময়ূরপঙ্খী সৃজনশীল লাইব্রেরি, ময়ূরপ্খী ইয়ুথ অ্যান্ড স্পোর্টস কাউন্সিলসহ বহু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ।
২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ময়ূরপঙ্খী শিশু-কিশোর সমাজকল্যাণ সংস্থার (গভ. রেজি. নং: ঢ-০৯৫৮৭) মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত ও দুঃস্থ মানুষের কল্যাণ, সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও নারীদের শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকার এবং যুব কল্যাণ নিয়ে কাজ করছি। দেশের বাইরে ইতোমধ্যে ৪০টির বেশি দেশে ময়ূরপঙ্খীর প্রতিনিধি রয়েছে।
আমি ভারত, মালয়েশিয়া, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালদ্বীপে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছি।
গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম, টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়ায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ইভেন্ট অর্গানাইজার ও উপস্থাপক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছি। ময়ূরপঙ্খী বিচিত্রা নামক ম্যাগাজিনের প্রকাশক ও সম্পাদক আমি। আমি সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউনিসেফ, ইউএন ভলান্টিয়ারহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। ছোটদের জন্য বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় দৈনিক, মাসিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে।
মানবতার সেবায় নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি মূলত আমার আদর্শ বাবার কল্যাণে। অনেক বেশি ভালোবাসি বাবা তোমাকে ।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ময়ূরপঙ্খী
ঢাকা/রুহিত/রফিক