এখন ভাদ্র মাস। ইলিশের ভরা মৌসুম। আর এ মাসেই লক্ষ্মীপুরে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে কয়েকগুন। মেঘনায় জাল ফেললেই ভরে যাচ্ছে ইলিশে। দামও বেশ ভালো। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি এখানকার জেলেরা। মহাজনের ঋণ পরিশোধ করে সাচ্ছন্দে দিন কাটছে তাদের। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারের নানামুখি পদক্ষেপের কারণে ইলিশের উৎপাদন প্রতিবছরই বাড়ছে।
জানা যায়, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস ইলিশের ভরা মৌসুম। এবার মৌসুমের শেষ মাসে লক্ষ্মীপুরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। এখানকার জেলে, আড়ৎদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ইলিশকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এছাড়া দাম সস্তা, তাই জেলার মাছঘাট ও হাট-বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষণীয়। গভীর রাত পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সুস্বাদু রূপালি ইলিশ।
জেলা সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, রায়পুরের আলতাফ মাস্টার ঘাট, কমলনগরের মতিরহাট, রামগতির টাংকি বাজারসহ মেঘনা তীরবর্তী মাছঘাটে প্রতিদিন শত শত মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ঘাটগুলো থেকে পাইকাররা কম দামে ইলিশ ক্রয় করে জেলার খুচরা বাজারে বিক্রি করছেন। এছাড়াও এখানকার মেঘনায় ধরা পড়া ইলিশ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে।
রামগতির সিকদার মাঝি বলেন, এখন নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তাই অলস বসে থাকি না। দিন-রাত ইলিশ ধরেই ব্যস্ত সময় পার করছি। দামও বেশ ভালো। আল্লাহ মুখ ফিরে তাকাইছে। জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ দিছে। এবার মহাজনের ঋণ পরিশোধ করে কিছু টাকা সঞ্চয়ও করতে পারমু।
কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাটের আড়ৎদার রুহুল আমিন বলেন, এবার কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে ছোট আর মাঝারি সাইজের ইলিশ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এখন ছোট ইলিশ কেজি প্রতি ২’শ থেকে ৩৫০ টাকা, মাঝারি সাইজের ইলিশ ৪’শ থেকে ৬’শ টাকা। এক কেজি অথবা এর চেয়ে বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭’শ টাকা থেকে তারও বেশি দামে। তবে খুচরা বাজারগুলোতে মাছঘাটের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, নদীর গভীরতা বেশি হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে সদর, রায়পুর ও কমলনগরের মেঘনায় কিছুটা কম ইলিশ পাচ্ছে জেলেরা। তবুও আগের বছরের চেয়ে বেশি ইলিশ পাচ্ছে তারা। আর এসব সম্ভব হয়েছে, সরকারের নানামুখি পদক্ষেপের কারণে।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৬০ হাজার জেলে রয়েছে। এরমধ্যে নিবন্ধিত ৩৭ হাজার ৩২৬ জন। জেলায় জেলে পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ২ লাখের বেশি। প্রতি বছর এ জেলায় ইলিশের গড় উৎপাদন ২০ হাজার মেট্রিক টন।