কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম ও অবকাঠামো নির্মাণে গত এক দশকে সাড়ে ছয় হাজার অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে গত মাসে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’। এরই প্রেক্ষিতে নরওয়ের পর দেশটিতে কর্মরত অভিবাসী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ালো জার্মানি জাতীয় ফুটবল দল।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয়ের ম্যাচ শুরুর আগে জার্মানির খেলোয়াড়রা কালো রঙের একটি জার্সি পরেছিলেন। প্রতিটি জার্সির সামনে সাদা রঙয়ে বড় করে একটি ইংরেজি বর্ণ লেখা, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালে যার পূর্ণ রূপ দাঁড়ায় ‘হিউম্যান রাইটস’ অর্থাৎ ‘মানবাধিকার’।
ম্যাচে জার্মানির প্রথম গোল করা মিডফিল্ডার লিওন গোরেৎকা পরে নিশ্চিত করেছেন, এই প্রতিবাদটি কাতার বিশ্বকাপ অবকাঠামো নির্মাণে নিয়োজিত অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে মানবাধিকার লংঘন সম্পর্কিত। তিনি বলেছেন, ‘সামনে বিশ্বকাপ আসছে এবং এ বিষয়ে আলোচনা হবে। আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে এটা এড়িয়ে যাচ্ছি না।’ জার্সির লেখাগুলো নিজেরাই লিখেছিলেন জানান গোরেৎকা।
গত বুধবার (২৪ মার্চ) জিব্রাল্টারের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয়ের ম্যাচ শুরুর আগে নরওয়ে জাতীয় ফুটবল দল একই প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তাদের জার্সিতে লেখা ছিল, ‘মাঠে ও মাঠের বাইরে মানবাধিকার।’
অতীতে কোনও ধরনের রাজনৈতিক মন্তব্য বা বিবৃতি দেওয়ায় ফিফা ও অন্য ফুটবল সংগঠনগুলো খেলোয়াড়দের শাস্তি দিয়েছিল। তবে এই আলোচিত ঘটনার পর অভিবাসী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোয় কোনও ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে ফিফা জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করে ফিফা এবং মঙ্গলের জন্য ফুটবলের ক্ষমতাতেও বিশ্বাসী তারা। এই বিষয় সম্পর্কিত কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’
বৃহস্পতিবার কাতারি বিশ্বকাপ আয়োজকদের এক মুখপাত্র মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দেন, ‘২০২২ সালের কাতার ফিফা বিশ্বকাপের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার ব্যাপারে সবসময় স্বচ্ছ আমরা। ২০১৪ সালে অবকাঠামো নির্মাণ শুরুর পর থেকে সেখানে কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।’