ওয়ানডে ব্যাটসম্যান র্যাংকিংয়ে বিরাট কোহলিকে সরিয়ে চূড়ায় ওঠার দিনে বাবর আজম টি-টোয়েন্টিতেও অনবদ্য এক ইনিংস খেললেন। তার ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২০৪ রানের কঠিন টার্গেটও সহজে ছুঁলো পাকিস্তান। ২ ওভার হাতে রেখেই ৯ উইকেটে জিতেছে তারা। অতিমানবীয় এই জয়ে চার ম্যাচের সিরিজে ২-১ এ এগিয়ে গেলো পাকিস্তান।
সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে টস জিতে ফিল্ডিং নেয় পাকিস্তান। কিন্তু উল্টো তাদের চেপে ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে জান্নেমান মালান ও এইডেন মার্করাম ব্যাট হাতে চড়াও হন। পাওয়ার প্লেতে তারা ৬৫ রান তোলেন। ১০ ওভার শেষে দলীয় স্কোর একশ। ১১তম ওভারে ১০৮ রানের শক্ত জুটি ভেঙে দেন মোহাম্মদ নওয়াজ। টানা তৃতীয় ম্যাচে ফিফটি করা মার্করাম ৬৩ রানে বোল্ড হন।
এরপর জর্জ লিন্ডেকে নিয়ে জান্নেমানের ১৬ বলে ৩৩ রানের আরেকটি দুর্দান্ত জুটি। এক চার ও ২ ছয়ে সাজানো লিন্ডের ১১ বলে ২২ রানের ইনিংস থামে ফাহিম আশরাফের বলে। ২ রানের ব্যবধানে জান্নেমান ফিরে যান। ৪০ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৫৫ রান করে নওয়াজের দ্বিতীয় শিকার হন। পরে রাসি ফন ডার ডাসেন তাদের দেখানো পথে ঝড়ো ইনিংস খেলেন। তার ২০ বলে অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা দুইশ পার করে।
৫ উইকেটে ২০৩ রান করে হয়তো স্বস্তিতে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু দুই ওপেনার বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান বিশাল রান পাহাড় হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন। পাওয়ার প্লেতে ৬৪ রান, প্রোটিয়াদের মতো ১০ ওভার শেষে তাদেরও স্কোর ১০০। ততক্ষণে ২৭ বলে ৭ চার ও ১ ছয়ে ফিফটি করে ফেলেন বাবর। রিজওয়ানও ফিফটি করেন ৩২ বলে। পাকিস্তানের দেড়শ হয় ১৪ ওভার শেষেই।
প্রোটিয়া বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে বাবর ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেন মাত্র ৪৯ বলে, ১১ চার ও ৪ ছয়ে। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন অধিনায়ক। কিন্তু ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে তার ব্যাট ছুঁয়ে বল ধরা পড়ে উইকেটকিপার হেনরিখ ক্লাসেনের গ্লাভসে। লিজাড উইলিয়ামস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি পেলেও পাকিস্তানের জয় তখন ছিল হাতছোঁয়া দূরত্বে।
৫৯ বলে ১৫ চার ও ৪ ছয়ে ১২২ রান করেন বাবর। রিজওয়ানের সঙ্গে তার জুটি ১৯৭ রানের, যা রান তাড়ায় টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড জুটি। আর এই ফরম্যাটে এটি যে কোনও উইকেটে চতুর্থ সর্বোচ জুটি। বাবর আউট হওয়ার দুই বল পর পাকিস্তান জয় নিশ্চিত করে ফখর জামানের টানা দুটি চারে। ২ বলে ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আর রিজওয়ান ৪৭ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৭৩ রানে টিকে ছিলেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন বাবর। সিরিজের শেষ ম্যাচটি হবে শুক্রবার, এই সেঞ্চুরিয়নে।