প্রথম পর্বে আমরা ব্যাটিং ওয়ার্মআপ ও ব্যাটিং প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ আমরা ব্যাটিং পরিকল্পনা ও জুটি নিয়ে আলোচনা করবো।
প্রথম পর্ব: আশিকের ক্রিকেট পাঠশালা (প্রথম পর্ব)
ব্যাটিং পরিকল্পনা
দলের ওয়ার্মআপের পর প্রয়োজনীয় অনুশীলন করে নেওয়া ভালো। অনেক সময় ইনিংসের শুরুতে পা চলতে চায় না তাই পায়ে কাজ করে নিলে ভালো। নতুন বল খেলার জন্য মনের ভেতরে ছবি তৈরি করে নিলে ভালো। প্রতিটি বল খেলার আগে একই রকম রুটিন থাকলে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আন্তর্জাতিক খেলায় ভালো ব্যাটসম্যানদের একই রকম কিছু কাজ করে। যেমন, পিচে ট্যাপ করা, ব্যাট ঘুরানো, পা নাড়াচাড়া করা ইত্যাদি। একেক ব্যাটসম্যানের প্রস্তুতি একেক রকম। বল খেলার আগে এগুলো শেষ প্রস্তুতি। যেটা ভালো লাগে সেটা করবে।
প্রথম বলটা খুব গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় বল থেকে। দ্বিতীয় বলে কি হবে সেটা চিন্তা না করে যে বলটা খেলবো সেটা নিয়ে ভাবা জরুরী। ইতিবাচক থাকতে হবে। ব্যাটসম্যানদের কাজ হলো রান করা। তাই রান করার ইচ্ছাশক্তি প্রতিটি বলের উপর মনসংযোগ বাড়াবে। সব ব্যাটসম্যানদের শক্তিশালী জায়গা থাকে সেটির জন্য অপেক্ষা করলে ভালো। একটি ভুল করলে আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে আসতে হবে। তাই ঝুঁকি নেওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
জুটি গড়ে তুলতে হবে। ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে গেলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। ব্যাটিংয়ের সময় নেতিবাচক শারীরিক ভাষা ড্রেসিংরুমের প্রভাব ফেলতে পারে। খেলার সময় মনোসংযোগ এবং শান্ত থাকাটা আবশ্যক। লক্ষ্যে পৌঁছানো না পর্যন্ত নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাটিং করে যাওয়া জরুরী।
কোন সময়ে শুরু এবং কোন সময়ে শেষ সেই বিষয়ে সচেতন থাকলে ইনিংস লম্বা হয়। যেমন: খেলার মাঝে অনেক সময় বিরতি পরে। ড্রিংকস ব্রেক বা যে কোনো ঘটনায় খেলা বন্ধ হলে সেই সময়ে মানসিক পরিবর্তন ঘটে। টেস্ট ম্যাচে তিন সেশনে ব্যাটিং হয়। যেকোনো বিরতির আগে সজাগ থাকতে হবে এবং বিরতির পর আবার নতুন করে শুরু করাটা জরুরী। একজন ব্যাটসম্যান দশ ভাবে আউট হতে পারে। তবে সচরাচর বোল্ড, ক্যাচ, এলবিডব্লিউ বা রান আউট; এ চারটাই বেশি ঘটে। যদি লো রিক্সে নিচে নিচে শট খেলে তাহলে ক্যাচ আউট থেকে বাঁচা যায়।
জুটি
পার্টনারের সঙ্গে বোঝাপরা করে রানের বিষয়ে পরিকল্পনা করা আবশ্যক। ১ রান বের করার দিকে মনোযোগী হলে রানের চাকা সচল থাকে। তাতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। ১ রান নেওয়ার জন্য খালি জায়গায় খেলতে হবে। অনেক সময় বল ফিল্ডারের হাতে চলে যায়। ব্যাটসম্যান আরও জোরে মারার চেষ্টা করে তখনও যদি ফিল্ডারের হাতে বল যায় মনে হতাশা সৃষ্টি হয় (তাই অভ্যাস অনুশীলন করতে হবে ম্যাচের সঙ্গে মিল রেখে)। ম্যাচে কোন ফিল্ডার কেমন, কোন হাতে থ্রো করে সেটা বুঝতে পারলে সিঙ্গেল নেওয়া সহজ।
ম্যাচ জিততে হলে জুটির বিকল্প নেই। দলীয় রান বৃদ্ধি এবং দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করা জুটির প্রধান সূত্র। মাঝে মাঝে, পার্টনারের মাঝে যে কোনো একজনের অস্থিরতা শুরু হতে পারে। সেই সময়ে আবেগকে সামলে অপরসঙ্গীর সাথে আলাপ করতে হবে। কোনো বোলার যদি দুই ব্যাটসম্যানকে চাপে ফেলে তখন প্রয়োজনে আগ্রাসী ব্যাটিং করা যেতে পারে। যাতে বোলারের পরিবর্তন হয়। ফিল্ড প্লেস অনুযায়ী, মাঝারি ঝুঁকি নেওয়া যেতে পারে। এতে ফিল্ডারের স্থান পরিবর্তন আসলে তখন স্বাভাবিক খেলাটাও খেলা যায়। দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে বাহির থেকে বেশি উপদেশ না দেওয়াই ভালো এবং মাথা ঠান্ডা করে নিজের পরিকল্পনায় খেললে ফল ভালো হয়।
অনুলিখন: ইয়াসিন হাসান