ইসরায়েলের বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা দিলো বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বুধবার (২৬ মে) সকালে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদানের কাছে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশের দেওয়া এসব ত্রাণ আজই পাঠিয়ে দেওয়া হবে ফিলিস্তিনে।
ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনে যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তার প্রতি ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে দেশটির প্রতি অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে এই ঘটনার সুবিচার দাবি করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, ‘ফিলিস্তিনের প্রকৃত বন্ধু বাংলাদেশ। আমরা শুরু থেকেই এই দেশের সরকার ও জনগণের সহায়তা পেয়ে আসছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর বাংলাদেশে আছি। তবে গত ১৪ দিন ধরে বাংলাদেশের মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। গাজা হামলার পর এ দেশের মানুষ আমাদের বিপুলভাবে সহায়তা করেছে।’
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আমাদের দু’টি ব্যাংক হিসাব করতে সহায়তা করেছে। এছাড়া কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিংয়েও টাকা পেয়েছি। আমরা এই সহায়তা গাজায় পাঠাবো। তবে ঠিক কত টাকা পেয়েছি, এখনও হিসাব হয়নি। সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের এমডি এবাদুল করিম।
এসময় ফিলিস্তিনকে ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ওষুধসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। সম্প্রতি দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এসব সামগ্রী সরবরাহ করা হয়।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের জনগণকে মানবিক সহায়তা হিসেবে ৫০ হাজার ডলার প্রদান করবেন। বাংলাদেশ এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা সরসরি ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য সহায়তা প্রদান করছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনির নির্যাতিত জনগণের প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত দৃঢ় সমর্থন ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ফিলিস্তিনের জন্য সহায়তা করে আসছে। ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমানা অনুসারে দ্বিরাষ্ট্রের ভিত্তিতে ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায় বাংলাদেশ। আমরা বিশ্বাস করি, একদিন স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ জাতসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের সমস্যা বারবার তুলে ধরেছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতকে টেলিফোন করে সহায়তা পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।