সারা বাংলা

বাগেরহাটে সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি, ভেসেছে মাছের ঘের

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রবল জোয়ারে নদ-নদীর পানি বেড়ে বাগেরহাট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বহু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামের মৎস্যচাষিদের চিংড়ি মাছের ঘের ভেসে গেছে।  

মোরেলগঞ্জ উপজেলার কেয়ারবাজার থেকে সন্নাসী বাজারে যাওয়ার পিচঢালা সড়কের দুইস্থানে ভেঙে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শরণখোলা গ্রামের মো.  আবুল কালাম শিকদার বলেন, রাতে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ভোলানদীর পানি বৃষ্টি পায়। সকালে জোয়ারে বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে। শুধু পানি নয় ঢেউয়ে ঘরের ভিত নষ্ট হয়ে গেছে। 

মোরেলগঞ্জ উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের মো. ইদ্রিস খলিফা, নেয়ামুল জমাদ্দারসহ কয়েকজন বলেন, রাতেও বুঝতে পারেননি এত পানি উঠবে। সকাল ৮টার দিকে হটাৎ পানি এসে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যায়। সবাইকে নিয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন। চরগ্রামের জলিল গুরু ও সাইদুল শিকদার বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রতিটি ঝড়ে তাদের পানিতে ডুবতে হয়। মালামাল নষ্ট হয়। হাঁস-মুরগি মারা যায়। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মুন্সি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ফলে নদীর পানি বেড়ে আশপাশের পাঁচটি গ্রামের কয়েকশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের রান্না বন্ধ রয়েছে। নদীর পাশে বাড়ি হওয়াটাই তাদের জন্য কাল হয়েছে। 

মোংলা উপজেলার কানাইনগর এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, কানাইনগর, কাটাকাল, জয়মনিরঘোলসহ কয়েকটি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে৷ এসব গ্রামের কয়েক শত পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

বাগেরহাট সদর উপজেলার মাঝিডাঙ্গা গ্রামের সোহাব হোসেন রতন বলেন, জোয়ারের পানিতে মাঝিডাংগাসহ আশপাশের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। 

মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম বলেন, জোয়ারের পানিতে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় মানুষের মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে মৎস্যচাষিদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। 

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারে পানি বেড়ে শরণখোলা উপজেলার কিছু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করবেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ইয়াসের প্রভাবে বাগেরহাটে ঝড় হয়নি। তবে বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়ে অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। ইয়াসের প্রভাব না কাটা পর্যন্ত প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় থাকবে বলে জানান তিনি।