মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের নিচতলার পুরো কাঠামো ভেঙ্গে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা সেই ভবন এবং এর আশপাশ এলাকা ফাঁকা করে ফেলেছেন। নিচতলার ভবনের সবকটি পিলারে বড় ধরনের ফাটল ধরেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি পুরোপুরি ধসে পড়তে পারে। তাই সেখান থেকে উদ্ধারকর্মীরা সবাইকে সরে যেতে বলেছেন।
বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে প্রচন্ড বিস্ফোরণ হয়েছে তাতে ভবনটির বিভিন্ন অংশে অবশ্যই ফাটল ধরার আশঙ্কা থাকছে। তাছাড়া নিচতলার শক্তিশালী কাঠামো যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তখন উপরের অংশ ভার বইবে কিভাবে?
বিষ্ফোরণের কারণে পুরোনো এই ভবনটির রিচতলার শর্মা হাউস একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে। রেস্টুরেন্টের ভেতেরে থাকা সব ফার্নিচার ছিটকে চলে আসে বাইরে, রাস্তায়। আস্ত ছিলো না দোকানের ফ্রিজ এবং খাবার রাখার স্টিলের আলমারিও।
ভবনটির দোতলায় সিঙ্গারের একটি শো-রুম। রেস্টুরেন্টে বিষ্ফোরণের কারণে ভবনের পেছনের দেয়াল পুরোপুরি ধসে পড়ে। যার কারণে দোতলায় থাকা সিঙ্গারের বিভিন্ন মালামালের কার্টন ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। আশংকা করা হচ্ছে, যে কোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে।
ভবনের তিন ও সাড়ে তিন তলায় থাকা বাসিন্দাদের ইতিমধ্যে ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রেড ক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। বোমা ডিসপোজাল ইউনিটও রয়েছে এলাকায়। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণের ঘটনা এখনো রহস্যজনক। ঠিক কী কারণে এত বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা ফায়ার সার্ভিসের কেউ। তবে গ্যাস লিকেজকেই এই বিস্ফোরণের বড় কারণ হিসেবে মানার প্রাথমিক যুক্তি বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে ক্রমশ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'কোনো আশঙ্কাই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কী কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। আমাদের অনেকগুলো টিম কাজ করছে। নাশকতার আশঙ্কা থেকে বোম্ ডিসপোজাল ইউনিটও এখানে এসেছে। তারা তাদের এঙ্গেল থেকে কাজ করছে।'
সাড়ে তিন তলার পুরোনো ভবনটির নিচতলায় থাকা শর্মা হাউজে যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, তার কারণে আশে পাশের সব ভবন, উল্টোদিকের আড়ং শো-রুমের এক থেকে চার তলা এবং পাশের বিশাল সেন্টার মার্কেটটির দোতলা ও তিন তলার সব কাঁচ ভেঙ্গে পড়েছে। রাস্তা দিয়ে মগবাজারের দিকে যাওয়া দুটি বাসের সব কাঁচ ভেঙ্গে যায়। ইস্কাটন এলাকা থেকে মালিবাগগামী ফ্লাইওভারের শেষে এসে একটি বাসেরও সব কটি কাঁচ ভেঙ্গে যাত্রীরা আহত হয়।
ওয়ারলেস গেটের রাশমনো হাসপাতাল, মগবাজারের আদদ্বীন হাসপাতাল, রেল গেটের কমিউনিটি হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়। এ দূর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭ জন মারা গেছেন।