এই তো গত পরশু দিনের ঘটনা। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ড্যান ক্রিস্টিয়ান এক ওভারে ৫ ছক্কা মেরে মনোবল ভেঙে দেন সাকিব আল হাসানের। আসলেই কি তাই! বরং অজি ব্যাটসম্যানের ওই ঝড় আরো শক্তিশালী করে তুলেছে ৩৪ বছর বয়সী অলরাউন্ডারকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পঞ্চম ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিলেন। টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠবার হলেন ম্যাচসেরা, সিরিজ সেরার পুরস্কারও উঠল তার হাতে চতুর্থবার।
শনিবারের ম্যাচে ওই এক ওভারে ৩০ রানসহ মোট ৫০ রান দেন সাকিব, টি-টোয়েন্টিতে যা তার সর্বোচ্চ খরচা। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ তার ওপর ভরসা রেখেছিলেন। বিশ্বাস ছিল অধিনায়কের, 'টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন হতে পারে। আমরা জানি সাকিব চ্যাম্পিয়ন বোলার। সে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়াবে।'
চ্যাম্পিয়নের মতোই ঘুরে দাঁড়ালেন সাকিব। অষ্টম ওভারে বল হাতে নিলেন, দ্বিতীয় বলেই ম্যাথু ওয়েডকে করলেন বোল্ট। দ্বিতীয় ওভারে কোনো উইকেট পাননি, দেন ২ রান। তৃতীয় ওভারে নিলেন অ্যাস্টন টার্নারের উইকেট, গড়লেন অনন্য এক কীর্তি। দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে শততম উইকেট তার এবং প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই ফরম্যাটে ১০০ উইকেট ও এক হাজার রানের মাইলফলকে। এখানেই শেষ নয়, সাকিব শেষ ওভারে নাথান এলিসকে বোল্ড ও অ্যাডাম জাম্পাকে বানান মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ।
২৪ রানের মধ্যে শেষ আট উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ৬২ রানে তাদের গুটিয়ে দিতে সাকিব ৩.৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ৯ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এটাই সেরা বোলিং ফিগার।
অথচ প্রথম তিন ম্যাচে একটি করে উইকেট নিয়ে সাকিব ছায়া হয়ে ছিলেন। শেষ করেছেন ৭ উইকেট নিয়ে। মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলামের সঙ্গে যৌথ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট।
ব্যাটিংয়ে সাকিব ম্লান ছিলেন শুরু থেকে। এই সিরিজে তার সেরা পারফরম্যান্স ৩৬ রান, প্রথম ম্যাচে। পরের দুই ম্যাচে সমান ২৬টি করে রান করেন। চতুর্থ ম্যাচে তার ব্যাটে আসে ১৫ রান। আর শেষ ম্যাচে করেছেন ১১ রান। এই দিনে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার এলবিডব্লিউ হলেন সাকিব।
ছোট ছোট অবদান রাখলেও এই সিরিজে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাটসম্যান সাকিব। ৫ ম্যাচে ১১৪ রান করেছেন। মিচেল মার্শের (১৫৬) পর দ্বিতীয় স্থানে তিনি।