চিত্রনায়িকা পরীমনিকে গত ৫ আগস্ট জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত অবস্থায় আদালতে হাজির করা হয়েছিল। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) একই পোশাকে তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালতে নেওয়া হয়। তাকে একই পোশাকে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
পরীমনির আইনজীবীরা বলেছেন, ‘১২২ ঘণ্টা পরও একই পোশাকে পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।’ এর জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, ‘পরীমনি ইচ্ছা করেই কাপড় চেঞ্জ করেনি। এটা তার রাজনীতি।’
রিমান্ড শুনানিতে পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘পরীমনি চলচ্চিত্র নায়িকা। ফোর্বস ম্যাগাজিনের ১০০ জনের তালিকায় তার নাম আছে। সি ইজ সামথিং। বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্যও থামথিং। তার প্রতি আমাদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। পরীমনির আলাদা লাইফস্টাইল আছে। অথচ দেখেন, ১২২ ঘণ্টা পরও একই পোশাকে পরীমনিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।’
এর জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘সব আসামি পোশাক চেঞ্জ করার সুযোগ পান। তার সঙ্গে অপর যে তিন আসামি আছে, তারা সবাই কিন্তু পোশাক চেঞ্জ করেছে। পরীমনি ইচ্ছে করেই কাপড় চেঞ্জ করেনি। তাকে কাপড় দেওয়া হয়েছিল। এটা তার রাজনীতি।’
পরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি, পরীমনি কাপড় চেঞ্জ করেছিল। আজ আবার আগের দিনের পোশাক পরেই এসেছে।’
তখন পরীমনির আইনজীবী বলেন, ‘পরীমনি কি পুরুষ যে ইচ্ছে হলেই পোশাক চেঞ্জ করতে পারবেন।’
রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘পরীমনিকে আগে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। পূর্ণাঙ্গভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তার বাসায় কীভাবে মাদক এলো, বাসায় এসে কারা মাদক গ্রহণ করতো, এর উৎস কোথায়—এসব জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন। এসব উদঘাটন না করতে পারলে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল হবে না। এর পেছনে অনেক রুই-কাতলা আছে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘তাকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। আরও ১০ দিন রিমান্ডে নিলে কি ১০০ বোতল মদ উদ্ধার করা যাবে? যা উদ্ধার করার মতো তা উদ্ধার হয়ে গেছে। পরীমনি মেয়ে মানুষ, অসুস্থ। রিমান্ড বাতিল করে তার জামিন প্রার্থনা করছি।’
শুনানি আদালত পরীমনি ও দিপুর দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মাদক মামলায় নজরুল ইসলাম রাজ ও সবুজের পক্ষে তাদের আইনজীবী এস এম আক্তার-উজ্জামান (হিমেল) বলেন, ‘মাদক যা উদ্ধার করার মতো, তা হয়ে গেছে। রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই। চার দিন তো কম সময় না। তা মাদক মামলার রিমান্ডের জন্য যথেষ্ট।'
পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এটা বায়বীয় অভিযোগ। রাজ অসুস্থ। তাকে হ্যারেজ করা হচ্ছে। রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি।’
শুনানি শেষে আদালত রাজকে মাদক মামলায় দুই দিন ও পর্নোগ্রাফির মামলায় চার দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।