জাতীয়

ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ দেশে আসবে বৃহস্পতিবার

ভারতের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইউমের মরদেহ বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে দেশে আনা হবে।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল-মোটেলের অনলাইন বুকিং সিস্টেম উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষ করে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ ভারত থেকে দেশে আনা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু রেগুলার ফ্লাইট অপারেট হচ্ছে না। তাই এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতের সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। যে অপশনটি সহজ হয়, সে অপশন ব্যবহার করেই আমরা তার মরদেহ দেশে নিয়ে আসব।

তিনি আরও বলেন, মরদেহ আনার পুরো বিষয়টি দেখছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। মরদেহ দেশে আনার তিনটি পদ্ধতি ছিল। একটি হচ্ছে এখান থেকে ফ্লাইট আসার পথে ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে আনা অথবা ওখান থেকে যে রেগুলার ফ্লাইট আছে, সেভাবে আনতে হবে অথবা আমাদের একটি বিমান ওখানে গিয়ে উনাকে আনবে। সবগুলো অপশনই আমরা ওপেন রেখেছি, যেটা সহজ হয়। সেটাই কাজে লাগানো হবে।

তিনি বলেন, আমরা শোকাহত সবাই, একজন সম্মানিত পাইলট, যিনি এর আগেও বিভিন্ন দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে অনেক যাত্রীর জীবন রক্ষার্থে যে ক্রেডিট উনি দেখিয়েছেন এবং যাত্রীদের নিরাপদে অবতরণের ব্যাপারে উনি সমর্থ হয়েছেন; উনি আজকে আমাদের মধ্যে নেই।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিজি-০২২ ফ্লাইট নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন নওশাদ অসুস্থ বোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে ফ্লাইটটিকে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান।  একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে ফ্লাইটের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ফ্লাইটটিকে নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলট ক্যাপ্টেন মুস্তাকিম ফ্লাইটটি অবতরণ করান।

বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের উড়োজাহাজটির এই ফ্লাইটে ১২৪ জন যাত্রী ছিলেন।  তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন।  শুক্রবারই আরেকটি ফ্লাইটে করে আট সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল নাগপুরে যায়। ওই দিন মধ্যরাতে বিমানটিকে যাত্রীসহ ঢাকার বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়।

ফ্লাইটটি অবতরণের পর ক্যাপ্টেন নওশাদকে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়।  সেখানে দুদিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে রোববার তাকে হাসপাতালের সার্জিক্যাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এসআইসিইউ) নেওয়া হয়।  সেখানে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।  হার্ট অ্যাটাকের পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

রোববার (২৬ আগস্ট) রাতে নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে যান ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউমের দুই বোন। তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ক্যাপ্টেন নওশাদের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা চালু রাখার পক্ষে মত দেন। তবে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে সোমবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে না ক্যাপ্টেন নওশাদ ইন্তেকাল করেন।