পদ্মা ও মেঘনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে নদীতে স্রোতের তীব্রতাও বেড়েছে। স্রোতের কারনে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে ফেরি চলাচল না করতে পারায় নদী পাড়ের উভয় পাশে জানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পারাপারের অপেক্ষায় আছে তিন শতাধকি গাড়ি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিটিএ) সূত্র জানায়, চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ-পথে যানবাহন পারাপারের জন্য সাতটি ফেরি চলাচল করে। এর মধ্য একটি ফেরি বোলগ্যাটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিকল হয়ে গেছে। ফেরিটির মেরামতের কাজ চলছে।
মেঘনা নদীতে স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেরি কিশোরী, কামিনি ও কস্তুরি স্রোতের বিপরীতে চলাচল করতে সমস্যায় পড়ছে। শরীয়তপুরের নরসিংহপুর থেকে ফেরিগুলো ৫ কিলোমিটার উজানে গিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতে হয়। এতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বেশি সময় লাগে।
সূত্র জানায়, স্বাভাবিক ফেরি পারাপার অব্যাহত থাকলে প্রতিদিন ৫ শতাধিক গাড়ি পারাপর করা সম্ভব ছিল। নদীতে স্রোত বাড়ায় দিনে ৩০০ গাড়ি পারাপার করতে হিমসিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে চট্রগ্রাম ও সিলেট বিভাগের যাত্রী এবং পণ্যবাহী পরিবহন চাঁদপুর-শরীয়তপুর রুটের হরিনা-আলুবাজার নৌপথ ব্যবহার করেন। সম্প্রতি নির্মাণাধিন পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচলে বন্ধ রয়েছে। ফলে চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ রুটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
ফেরি ঘাটে আটকে পড়া ট্রাক চালক আব্দুর রহিম বলেন, ‘দৌলদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে যানজট। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ঘাট থেকে ফেরি ছাড়ছে না। তাই নরসিংহপুর আলুবাজার ঘাট হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হই। এখানেও স্রোতের তীব্রতার কারনে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। কখন ফেরিতে উঠতে পারব তা বুঝতে পারছি না। আল্লাহই জানেন আমাদের এ দুর্ভোগের শেষ কোথায়।’
ফেরি কিশোরীর চালক গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘নদীতে এখন প্রচন্ড স্রোত। ফেরি ঠিকভাবে চালাতে পারছিনা। দিনের বেশির ভাগ সময়ই ঘাটে বসে থাকতে হচ্ছে। জোয়ারের সময় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে স্রোত কিছুটা কমে আসে। তখন ফেরি চালাতে পারি।’
ঘাটের ইজারাদার জিতু মিয়া বেপারী বলেন, ‘দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ঢাকা ও চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াতের জন্য পদ্মা ও মেঘনা নদীর ফেরিঘাটগুলো গুরুত্বপূর্ণ্। এ নৌপথে অনেক পুরাতন দুর্বল ফেরি চলাচল করে। যার কারনে বর্ষা আসলেই ফেরি চলালে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।’
বিআইডব্লিটিসির নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন বলেন, ‘স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রতি ৬ ঘণ্টা পরপর জোয়ার-ভাটা হয়। ভাটার সময় নদীতে স্রোতে বেশি থাকায় ফেরি চলাচল করতে পারে না। তাই এই রুটের ছয়টি ফেরি চলাচল করলেও জোয়ারের সময় ফেরি চালাতে কষ্ট হয়ে যায়। এজন্য গাড়ি আটকা পড়ে।’
তিনি আরো বলেন, ‘চারটি ফেরি উজানে গিয়ে মেঘনা পাড়ি দিতে হয়। স্রোতের তীব্রতা কমলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।’