খেলাধুলা

ফাইনালে হেরেও ‘সবচেয়ে সুখী মানুষ’ জোকোভিচ

৫০ বছরেরও বেশি সময় পর পুরুষ টেনিসে একই বছরে চারটি গ্র্যান্ড স্লামই জিতে ইতিহাস গড়ার পথে ছিলেন নোভাক জোকোভিচ। সেই ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে আর্থার অ্যাশে স্টেডিয়ামে এসেছিলেন ২৩ হাজার দর্শক। ইউএস ওপেন ফাইনালে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের যে সমর্থন পেয়েছেন, তা আবেগপ্রবণ করে তুলেছিল সার্ব তারকাকে। না, বিজয়ের পতাকা উড়াতে পারেননি। তবে দর্শকদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তা ২১ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের সমান বললেন জোকোভিচ।

দানিল মেদভেদেভের কাছে ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪ গেমে রোববারের (১২ সেপ্টেম্বর) ফাইনালে হেরে যান রজার ফেদেরার ও রাফা নাদালের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী। দ্বিতীয় সেটে গিয়ে তো মেজাজই হারিয়ে ফেলেন রাশিয়ান প্রতিপক্ষকে পয়েন্ট দিয়ে। তিনবার র‌্যাকেট আছাড় দিয়ে ভেঙেও ফেলেন জোকোভিচ। তৃতীয় সেটে ৫-২ গেমে পিছিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে ব্যবধান ৫-৪ এ কমিয়ে আনেন। চেঞ্জওভারের সময় দর্শকরা তার নাম এতবার উচ্চারিত হয়, যে আর নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। কাঁদতে দেখা যায় তাকে।

নাদাল ও ফেদেরারকে টপকে যাওয়া হয়নি, পারেননি ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্লাম জিততে। কিন্তু যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তাতে অভিভূত জোকোভিচ। অন-কোর্ট ইন্টারভিউতে বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা বলেন, ‘আমি ম্যাচ জিততে পারিনি, কিন্তু আমার হৃদয় আনন্দে ভরে গেছে। পৃথিবীর বেঁচে থাকা সবচেয়ে সুখী মানুষ আমি। কারণ আপনারা কোর্টে আমাকে বিশেষ অনুভূতি এনে দিয়েছেন। আপনারা আমার আত্মা ছুঁয়ে দিলেন।’

নিউ ইয়র্কে তিনবারের সাবেক চ্যাম্পিয়নের এমন অনুভূতির কারণ! ২০১৫ সালের ইউএস ওপেন ফাইনালের কথাই ধরুন। ফেদেরারের বিপক্ষে যে ম্যাচটি জিতেছিলেন জোকোভিচ। এছাড়া উইম্বলডনে সুইস তারকার সঙ্গে ফাইনাল কিংবা রোলাঁ গাঁরোতে নাদালের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাকে নায়কের চেয়ে বরং খলনায়ক হিসেবে দেখা হয়েছে প্রায় সময়। হঠাৎ করে ভালোবাসার সাগরে ভাসতে গিয়ে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন ২০ বারের গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী।

জোকোভিচ যোগ করেছেন, ‘অবশ্যেই আমার কষ্ট হচ্ছে হেরে যাওয়ায়। কিন্তু অন্যদিকে আমার মধ্যে এমন অনুভূতি হচ্ছে যা নিউ ইয়র্কে এসে জীবনেও হয়নি। যে সমর্থন, শক্তি ও ভালোবাসা আমি দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছি তা আমি সারাজীবন মনে রাখব। আবেগ ছিল অনেক, ২১টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের অনুভূতি ছিল। সত্যিই বলছি। নিজেকে খুব বিশেষ মনে হচ্ছিল। এমন মুহূর্তগুলোর সম্মুখীনই তো হতে চাইবে যে কেউ।’