ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘বিদেশি চ্যানেলের ক্লিন ফিড (বিজ্ঞাপনমুক্ত) অনুষ্ঠান সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত রাজস্ব আয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
সোমবার (৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন তিনি। ১ অক্টোবর থেকে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচার নিশ্চিত করার সরকারি ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি।
মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচারের আইন আগে থেকে থাকলেও এতদিন তা কার্যকর হয়নি। এর ফলে, একদিকে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনের বাজার সংকুচিত হয়েছে, অন্যদিকে বিদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার হলেও এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে কোনো রাজস্ব জমা হয়নি।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপন প্রচারের ফলে সরকার বছরে অন্তত ২ হাজার কোটি টাকা করে রাজস্ব হারাচ্ছে। দেশের শিল্প ও সেবা খাতকে যেখানে বিপুল টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন সম্প্রচারের মাধ্যমে নিজেদের পণ্য ও সেবার প্রচার চালাতে হচ্ছে, সেখানে বিদেশি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপন দেখিয়ে বাড়তি কোনো টাকা খরচ না করেই বাংলাদেশের বাজারে ভিনদেশি পণ্যের বিশাল চাহিদা তৈরি করেছে। এটি দেশীয় শিল্প ও সেবা খাতকে অসম প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দিয়েছে। অনেক দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন না দিয়ে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এর ফলে, দেশীয় উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এসব টেলিভিশনের বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগও হুমকির মুখে পড়ছে।
দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। এসব চ্যানেলের সংবাদ ও বিনোদনমূলক নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন নতুন শিল্পী কলাকুশলীরাও তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে পারছেন। তাই, দেশীয় চ্যানেলগুলোর যাত্রা ব্যাহত হলে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পাশাপাশি অসংখ্য মানুষের জীবিকাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন হিসেবে এফবিসিসিআই মনে করে, দেশীয় পরিবেশক-অপারেটররা আইন মেনে বিদেশি চ্যানেলের ক্লিন ফিড সম্প্রচার করলে তা দেশের টেলিভিশন শিল্প, স্থানীয় উৎপাদন ও সেবা খাত এবং রাজস্ব আহরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এর সুফল পাবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি।