নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার আলেচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলা বিএনপির সভাপতির পারিবারিক মার্কেটের একাংশ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) দিনব্যাপি মোহাম্মদী সুপার মার্কেট নামে ওই দ্বিতল মার্কেট ভাঙা হয়।
মার্কেটের একাংশ ভেঙে দেওয়ায় কমপক্ষে ১২ জন ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার অনুসারীদের উপস্থিতিতে পৌরসভার কর্মচারী ও শ্রমিকেরা বসুরহাটের জিরো পয়েন্ট-নিত্যানন্দমোড় এলাকার ওই মার্কেটের খালের পাড় অংশের প্রায় ১০ ফুট অংশ ভেঙে ফেলেন। ১৯৯৯ সালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই সেলিমের পারিবারিক প্রায় ১৬ শতাংশ জমির ওপর মার্কেটটি নির্মাণ করা হয় বলে জানা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই সেলিমের ছোট ভাই বেলায়েত হোসেন বলেন, মার্কেটটি সরকারি জায়গায় পড়েছে দাবি করে ২০২০ সালের প্রথম দিকে কাদের মির্জা একটি চিঠি দেন। ওই চিঠির বিরুদ্ধে আমরা জেলার সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করি। পরে ওই বছরের ৪ মার্চ আদালত থেকে মার্কেটের বিষয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশ এখনো বলবৎ রয়েছে। এরই মধ্যে আজ সকালে কাদের মির্জা দলবল নিয়ে মার্কেট ভেঙে দিয়েছেন।
বেলায়েত হোসেন স্বপন অভিযোগ করে আরও জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলা প্রশাসক বরাবর আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোহাম্মদী সুপার মার্কেট ভেঙে ফেলা হবে মর্মে হুমকি প্রদানের বিরুদ্ধে আইনগত প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করি। এরপর আজ মার্কেট ভাঙা শুরু হলে এ ঘটনা নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. খোরশেদ আলম খান, নোয়াখালীর এসপি মো. শহীদুল ইসলাম ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ারকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।
মার্কেট ভাঙার অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও প্রতিবারই তার নম্বর ব্যস্ত পাওয়া যায়। ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি, লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ওই মার্কেটটি না ভাঙার বিষয়টি পুলিশের একটি দল কাদের মির্জাকে অবহিত করেছে।’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, ‘মার্কেট ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি এক ব্যক্তি মুঠোফোনে আমাকে জানিয়েছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা খোঁজ নিতে হবে।’