বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পলাতক তিন আসামিসহ আরও সাত জনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
বুধবার (৩ নভেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। আগামি ৮ নভেম্বর অপর ৬ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
এদিন আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, পলাতক ৩ আসামি মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। মিজান ও শামীমের পক্ষে আইনজীবী ফারুক আহাম্মেদ, তানভীরের পক্ষে মো. নজরুল ইসলাম, মুয়াজের পক্ষে এনামুল হক এবং তিন পলাতক আসামির পক্ষে স্ট্রেট ডিফেন্স (রাষ্ট্র নিযুক্ত) আইনজীবী বদিউল আলম যুক্তি উপস্থাপন করেন।
এ নিয়ে মামলাটিতে ২৫ আসামির মধ্যে ১৯ জনের পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হলো। এ পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপিত হওয়া সকল আসামি নির্দোষ মর্মে তাদের বেকসুর খালাস দাবি করেছেন আইনজীবীরা।
ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইঞা আশা করছেন, আগামি ধার্য তারিখ বা তার পরদিন আসামি পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হবে। তার পর আদালত রায়ের তারিখ ঠিক করবেন। এরআগে ১২ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
শুনানিকালে এদিন কারাগারে থাকা ২২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানির পর তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে আসামিরা। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরের দিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।
ওই বছরের ১৩ নভেম্বর ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহেদুজ্জামান। গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।
মামলাটিতে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১৪ মার্চ এ মামলায় কারাগারে থাকা ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অপর তিন আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ শুনানি করতে পারেনি।
এরপর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর মামলায় কিছু ত্রুটি থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পুনরায় চার্জগঠনের আবেদন করেন। ৮ সেপ্টেম্বর আদালত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জগঠন করেন। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে ২২ আসামি আবারও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।