বগুড়ায় যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ নীতিমালার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়েছে। ‘আমরাই পারি’-এর উদ্যোগে এবং ইউএন ওমেন ও গ্লোবাল এফেয়ার্স কানাডার সহযোগিতায় বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এই নীতিমালা ঘোষণা করা হয়।
শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন ‘আমরাই পারি’ জোটের চেয়ারপারসন এবং মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘একটা সমাজের সভ্যতার স্তর নির্মিত হয় সেই সমাজে মানুষেরা কতটুকু অধিকার, নিরাপত্তাবোধ এবং মর্যাদা নিয়ে বাস করতে পারে তার ওপর। কেউ যদি লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে হয়রানির শিকার হয়ে থাকে, সেটিই যৌন হয়রানি। আমরা এমন পারিবারিক আবহে বেড়ে উঠি যে, বুঝতেও পারি না আমাদের বিভিন্ন আচরণ অন্যকে কষ্ট এবং অস্বস্তি দিয়ে থাকতে পারে। এই নীতিমালা আমাদের দিকনির্দেশনা দিবে, আমাদের আদর্শিকতার মাত্রা নির্মাণে সহায়ক হয়ে উঠবে।’
বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তরুণদের তিনি মুক্তিযুদ্ধের সৎ এবং যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে আদর্শ মানুষ হয়ে উঠার মন্ত্রণা দেন।
অনুষ্ঠানে সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ শাজাহান আলী প্রধান অতিথির মাধ্যমে সরকারি আজিজুল হক কলেজের যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন। প্রতিটি বিভাগে শিক্ষার্থীদের কাছে এই নীতিমালা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে অধ্যক্ষ আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল কাদের, আমরাই পারি জোটের নির্বাহী সমন্বয়কারী জিনাত আরা হক, সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর উম্মল খায়ের মোছা. গুলশান আরা বানু, গণিতের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. মাহতাব হোসেন মন্ডল এবং দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সফির আহম্মদ। পুরো আয়োজনটি সঞ্চালনা করেন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ মরিয়ার রহমান সাজু।
২০০৯ সালের হাইকোর্ট নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা এবং কমিটি গড়ে তোলার কথা থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং তদারকির অভাবে এখনও এটা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
ইউএন ওমেনের সহযোগিতায় ‘কম্ব্যাটিং জেন্ডার বেসড ভায়োলেন্স’ প্রজেক্টের অধীনে আমরাই পারি জোট বগুড়া, কুমিল্লা ও পটুয়াখালী জেলার ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ নীতিমালা এবং কমিটি গড়ে তোলার কাজ করছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় বগুড়ার স্বনামধন্য সরকারি আজিজুল হক কলেজ এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করলো।