১০ বছর আগে প্রেমের টানে আপনজন, ধর্ম ও দেশ ত্যাগ করে ফিলিপাইন থেকে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে আসেন জীন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। বিয়ে করেন ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের দবরদস্তা গ্রামে জুলহাস উদ্দিনকে। বিয়ের পর নাম বদলে হয়ে যান জেসমিন আক্তার। শুধু নিজের নামই পরিবর্তন করেননি তিনি পরিবর্তন করেছেন নিজের ভাষা, সংস্কৃতিকেও। ভালোবেসে আপন করে নিয়েছেন নিজের নতুন পরিবার ও এলাকাবাসীকে।
জানা গেছে, ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাইক প্রতীক নিয়ে অংশ নেন পেট্রিয়াকা। এলাকাবাসীর অনুরোধে তিনি ধাকানাই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন তার নিকটতম প্রার্থীকে। নির্বাচনে পেট্রিয়াকা পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৯৬ ভোট। অপর প্রার্থী পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৭ ভোট।
পেট্রিয়াকা বলেন, ‘আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইনি। এলাকাবাসীর অনুরোধে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করি। তারাই আমাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। এখন সেবা করে তাদের ঋণ শোধ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আসার পর বেশ বিপাকে পড়েছিলাম। কারণ আমি বাংলায় কথা বলতে পারতাম না। তবে আস্তে আস্তে অনেকটা শিখেছি। এখন সবার কথাই মোটামুটি বুঝতে পারি। আমিও বাংলায় কথা বলতে পারি।’
পেট্রিয়াকার স্বামী জুলহাস উদ্দিন বলেন, ‘পেট্রিয়াকা ফিলিপাইনের নাগরিক। সেখানে গ্রেজুয়েশন শেষে চাকরি নেয় সিঙ্গাপুরে। সেখানে আামার সঙ্গে তার পরিচয়। দুই বছর আমরা একসঙ্গে কাজ করি। পরে যে যার দেশে ফিরে যায়। কিন্তু আমাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। এক সময় আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। ২০১০ সালের শেষের দিকে আমি ফিলিপাইনে যাই। সেখানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে পেট্রিয়াকাকে নিয়ে দেশে ফিরে আসি। আমাদের দাম্পত্য জীবনে এখন এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।’