করোনাভাইরাস সংক্রমণের দক্ষিণ আফ্রিকান নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরসহ সব প্রবেশ পথে সতর্কবার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে দেশের সার্বিক করোনার পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব কথা জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা জেনেছি ‘ওমিক্রন’ নামক দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একটি নতুন ভ্যারিয়েন্টকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশের প্রবেশ পথে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডা. নাজমুল বলেন, এ বিষয়ে জাতীয় কারিগরি কমিটি, ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন টেকনিক্যাল কমিটিসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সভা করছেন। তারা বিভিন্ন দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। সেই সভা থেকেই আমরা সবার নিরাপত্তা দেওয়ার সমস্ত কার্যকরী উদ্যোগ নেব। সবার সহযোগিতা নিয়ে নতুন এ ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, কোনো অবস্থাতেই আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। যেকোন সময়েই সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তাই সংক্রমণ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি ও শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। নাক মুখ ঢেকে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে হবে এবং নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড বা তার চেয়ে বেশি সময় হাত ধুতে হবে।
দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে আমরা যদি দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখি এক লাখ ২৫ হাজার ৫৮৫টি পরীক্ষা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সপ্তাহের চেয়ে তিন শতাংশের মতো কম। আর এই সাত দিনে এক হাজার ৬৯০ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের চেয়েও চার দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে গত সাত দিনে দেশে ২৯টি মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সাত দিনের চেয়ে একটি মৃত্যু বেশি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সামগ্রিকভাবে বিগত সাত দিনের যে সংক্রমণ পরিস্থিতি, সেটি শতকরা শনাক্তের হিসাবে দুই শতাংশের নিচে আছে। গতকাল (২৭ নভেম্বর) ১৫৫টি নমুনা পজিটিভ পাওয়া গেছে, যা শতকরা হিসাবে শনাক্তের হার এক দশমিক ১৫ শতাংশ। সবমিলিয়ে গত ৩০ দিনে আমরা সংক্রমণের নিম্নগতি লক্ষ্য করেছি।
বন্দর পরিস্থিতি উল্লেখ করে নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে বিমান, সমুদ্র ও স্থলবন্দরগুলো দিয়ে সর্বমোট ৯ হাজার ৫৯০ জন যাত্রী দেশে প্রবেশ করেছে। আর তার সিংহভাগই এসেছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে। তাদের প্রত্যেককেই যথাযথ স্ক্রিনিং করার পর প্রয়োজন অনুযায়ী আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর প্রয়োজন, তাদের আমরা পাঠিয়েছি। আমরা মনে করি করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি আমাদের মেনে চলতেই হবে।