দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য বিভাগ। এতে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৬ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ টাকা।
সূত্র জানায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়। ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ৩ লাখ মেট্রিক টন এবং আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ১ লাখ মেট্রিক টন গম কেনা হয়েছে।
৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার জন্য তালিকাভুক্ত সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বিধি অনুযায়ী কোটেশন আহ্বান করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিটি সিটিপিইউ, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিটি খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানে ই-মেইলে পাঠানো হয়েছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঁচটি সিডিউল বিক্রি হয়েছে এবং চারটি কোটেশন জমা পড়েছে। গত ১৩ ডিসেম্বর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা হয়েছে। দরপত্রে ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি মেট্রিক টনের দাম ৪০৪.১১ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের গঠন করা বাজার দর যাচাই কমিটি বাংলাদেশ বন্দর পর্যন্ত প্রতি মেটিক টন গমের শুল্কপূর্ব দাম গম রপ্তানিকারক দেশভেদে যাচাই করে। গমের দাম রাশিয়ায় ৪৪৯.৫৪ মার্কিন ডলার, ইউক্রেনে ৪৪৮.৫৩ মার্কিন ডলার, আর্জেন্টিনায় ৪৬৮.৪৬ মার্কিন ডলার, অস্ট্রেলিয়ায় ৪৪৬.৬৬ মার্কিন ডলার এবং কানাডায় ৫৬৯.৬২ মার্কিন ডলার।
দাপ্তরিক বাজার দর যাচাই কমিটি ভারতীয় উৎসের গমের দাম নির্ধারণ করেনি। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেকোনো নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে ভারতীয় গমের এফওবি দাম পাওয়া যায়নি। যেহেতু সর্বনিম্ন দরদাতা উৎস দেশ হিসেবে ভারতের নামও উল্লেখ করেছে, সেহেতু টিইসি অ্যাগ্রিওয়াচ নামের ভারতীয় ওয়েবসাইট থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের গমের স্পট মার্কেট দর পর্যালোচনা করেছে। ওয়েবসাইটটিতে প্রতি কুইন্টাল ভারতীয় গমের দাম ১৯০০-২২৫০ রুপি পর্যন্ত পাওয়া যায়। প্রাপ্ত সর্বোচ্চ দর ডলারে রূপান্তর করলে প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম হবে ২৯৬ মার্কিন ডলার। এর সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত সম্ভাব্য জাহাজ ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় যুক্ত হবে। সে বিবেচনায় প্রাপ্ত দরপ্রস্তাব গ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে সবনিম্ন দরদাতা মেসার্স বাগদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের উদ্বৃত দর প্রতি মেট্রিক টন ৪০৪.১১ মার্কিন ডলারে আমদানির সুপারিশ করেছে। এতে ব্যয় হবে ১৭৩ কোটি ৩৬ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ টাকা। প্রতি কেজি গমের দাম পড়বে ৩৪.৬৭ টাকা।